X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চেয়ারম্যান সেলিমের ‘অবৈধ সম্পদের’ খোঁজে দুদক

ইব্রাহীম রনি, চাঁদপুর
০৩ এপ্রিল ২০২২, ২০:৩৯আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ২১:১৩

চাঁদপুর সদরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খানের ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার দাখিলকৃত সম্পদের হিসাবও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব তথ্য-উপাত্ত তলব করেছে সংস্থাটি।

দুদক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান সেলিম খানের নামে সম্পদ, স্ত্রী-সন্তান ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের মালিকানাধীন নৌযানের সংখ্যা ও মূল্য, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের রেকর্ডপত্র, পদ্ম-মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সেলিম খানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা সে সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র তলব করা হয়েছে। এসব তথ্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী সেলিম খানের কোথায়, কি পরিমাণ সম্পত্তি আছে তার অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

দুদক বলছে, ২০১৫ সাল থেকে মৎস্য চাষ করে আসছেন বলে তথ্য দাখিল করেছেন সেলিম খান। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সেলিম খানের মৎস্য চাষ সংক্রান্ত তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে পর্যালোচনা প্রয়োজন। সেলিম খান মৎস্য চাষ করেন কিনা সে সংক্রান্ত তথ্যাদি, যদি করেন তাহলে কত সাল থেকে করছেন, কি পরিমাণ জমিতে কতটি পুকুর রয়েছে, পুকুরে কোন কোন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মৎস্য চাষে বিনিয়োগ ও বার্ষিক আয় সংবলিত সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রয়োজন। এসব তথ্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর জন্য চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: চাঁদপুরে বালু উত্তোলনকারীরা কারাগারে যাবে: নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান

জানা গেছে, চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে দুদকে। তবে পদ্মা-মেঘনায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন-বিক্রি এবং সম্প্রতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের সুযোগে অর্থ লোপাটের চেষ্টাকালে সেলিম খান ও তার পরিবারের নাম উঠে আসে।

এ অবস্থায় তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকারকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি কাজও শুরু করেছেন। সেলিম খানের সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য বিভিন্ন দফতরে নথিপত্র চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। চাঁদপুর ছাড়াও যেখানে যেখানে সেলিম খানের সম্পদ রয়েছে সবকিছু অনুসন্ধানের আওতায় থাকবে। সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গ্রেফতারের দাবি

উল্লেখ্য, চাঁদপুরের নদী অঞ্চল থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এমনকি অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যান বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন বালু ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এদিকে, বালু উত্তোলনের কারণে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেও নদীভাঙন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইলিশ সম্পদসহ নদীর জীববৈচিত্র্য। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। নদীভাঙন ঠেকাতে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও স্থানীয়রা বিরোধিতা করলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।

এ অবস্থায় চাঁদপুরের নদী থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধে ভাঙনকবলিত মানুষ, জেলে ও জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিআইডব্লিউটিএ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতামত ও চিঠির আলোকে সরকারি সম্পদ ও ইলিশ রক্ষায় ভূমি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নদী রক্ষা কমিশসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

আরও পড়ুন: চাঁদপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান, ১১ ড্রেজার-বাল্কহেড জব্দ

ওই চিঠির পর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে সম্পৃক্ত নৌযান জব্দ ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন নদীপাড়ের ভাঙনকবলিত মানুষ।

/এএম/
সম্পর্কিত
ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আরেক শিশুরও
পদ্মায় গোসল করতে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু
তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দাবিতে বাসদের তিন দিনের রোডমার্চ
সর্বশেষ খবর
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!