X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী, বাসে বাড়তি ভাড়া

নাসির উদ্দিন রকি, চট্টগ্রাম
০১ মে ২০২২, ২১:৩৪আপডেট : ০১ মে ২০২২, ২১:৩৪

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রামে ঘরমুখো মানুষের ভিড় রয়েছে বাস ও ট্রেনে। রবিবার (১ মে) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তবে মহাসড়কে নেই যানজট।

এদিকে, ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় যাত্রীদের কেউ দাঁড়িয়ে আবার কেউ বাস কিংবা অন্য যানবাহনে বাড়িতে যাচ্ছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কেউ কেউ। বাসের টিকিট নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী।

হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম অংশে (চট্টগ্রাম থেকে ফেনী) যানজট নেই। এ কারণে নির্বিঘ্নে মানুষজন বাড়ি ফিরতে পারছেন।

ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী

সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় ছিল। রবিবার ছিল অগ্রিম টিকিটে যাত্রী পরিবহনের শেষ দিন। সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় সুবর্ণ এক্সপ্রেস, ৭টা ২০ মিনিটে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, ৭টা ৪০ মিনিটে সাগরিকা এক্সপ্রেস, ৮টা ৩০ মিনিটে চট্টলা এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ৩৫ মিনিট দেরিতে ৯টা ৩৫ মিনিটে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। সকাল ১০টায় কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুরগামী স্পেশাল ট্রেন-১ যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। 

সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে ছিল অতিরিক্ত যাত্রী। স্ট্যান্ডিং টিকিট নেওয়ার পরও শত শত যাত্রী যেতে পারেননি। ট্রেনের ভেতর দাঁড়ানোর জায়গা না থাকা এবং অনেক যাত্রীকে ছাদের ওপর ভ্রমণ করতে না দেওয়ায় অনেক যাত্রী টিকিট নেওয়ার পরও যেতে পারেননি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘রবিবার সকাল থেকে সবকটি ট্রেন সঠিক সময়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। এ পর্যন্ত ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের মধ্যে দু’একটিতে যাত্রীর ভিড় হলেও বাকিগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল না। বিশেষ করে ঢাকাগামী ট্রেনগুলোতে যাত্রীর চাপ অনেক কম। রবিবার বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ৩৫ মিনিট দেরিতে স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। বাকি ট্রেনগুলো যথাসময়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে।

উত্তরবঙ্গে যাওয়া যাত্রীদের কাছ খেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন কাউন্টারের ম্যানেজাররা

রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম স্টেশনে দায়িত্বরত চিফ ইন্সপেক্টর সালামত উল্লাহ বলেন, ‘সকাল থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের মধ্যে চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। এই ট্রেনে যাত্রী দাঁড়ানোর অবস্থা ছিল না। স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে অনেক যাত্রী ছাদে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা তাদের ছাদে করে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ করতে দেইনি। বাকি ট্রেনগুলোতে যাত্রী স্বাভাবিক ছিল।’

বাসে বাড়তি ভাড়া

চট্টগ্রামের বাস স্টেশনগুলোতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে। রবিবার নগরের একেখান, অলংকার, কদমতলী ও গরীবুল্লাহ মাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আন্তঃনগর বাস কাউন্টারগুলোতে সকাল থেকে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। অতিরিক্ত যাত্রী দেখে বাস বাড়াও বাড়তি নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়া যাত্রীদের কাছ খেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন কাউন্টারের ম্যানেজাররা।

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা যাবো। হানিফ এন্টারপ্রাইজ ১১০০ টাকার টিকিট ১৪০০ টাকা নিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কুষ্টিয়া, যশোর, টাঙ্গাইল, মৌলভীবাজার ও পাবনাসহ আরও কিছু জেলার বাস রয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী দেখে টিকিট প্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হয়েছে।

সৈয়দ সবুজ বলেন, নগরের মাদারবাড়ি শুভপুর বাসস্ট্যান্ডে চয়েস গাড়িতে ফেনী পর্যন্ত ভাড়া ছিল ১০০ টাকা। আমার কাছ থেকে ১৩০ টাকা নেওয়া হয়েছে।

স্ট্যান্ডিং টিকিট নেওয়ার পরও শত শত যাত্রী যেতে পারেননি

তবে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আগের মতো ঈদে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। ঈদে বেশিদিন বন্ধ থাকায় ঘরমুখো যাত্রীরা এবার আগেভাগে গ্রামে চলে গেছে। এ কারণে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে না। মহাসড়কের অবস্থাও ভালো। যানজট নেই। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারছেন।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনিসুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাস ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা বিষয়টি দেখছি। ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট নেই

রবিবার সকাল থেকে যানজট নেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম থেকে ফেনীর অংশে। ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ যানজটের যে ছয়টি স্থান চিহ্নিত করেছে, সেগুলো কঠোর নজরদারিতে রেখেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট নেই। সড়ক নিরাপদ এবং যানজটমুক্ত রাখতে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা ট্রাফিক পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সড়কজুড়ে সরব রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের মোবাইল টিম। সড়কে কোনও যানবাহনকে এলোমেলো পার্কিং করতে দেওয়া হচ্ছে না।’

/এএম/
সম্পর্কিত
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেললাইনে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত
হেলমেটের মান নির্ধারণ হবে কবে?
সর্বশেষ খবর
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!