বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গতকাল সোমবার সকালে গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। এরপর বন্ধ ছিল। আজ দুপুর ১২টা থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘আজকেও সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। মাঝে মাঝে মর্টারশেল বিস্ফোরণে এপারের স্থলভূমি কেঁপে উঠছে। মনে হচ্ছে মর্টারশেল এখানেই পড়ছে। এমন অবস্থায় সীমান্তে বসবাসকারীরা ভয়ভীতির মধ্য রয়েছেন।’
আরও পড়ুন: তুমব্রুর পর এবার উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলি
এদিকে সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ও পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের কীভাবে নিরাপদে রাখা যায় সে ব্যাপারে পরিদর্শন শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যাতে আতঙ্কিত না হয়, সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশে থেকে উৎসাহ ও সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়।’
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে কঠোর অবস্থানে আছে বিজিবি। এছাড়া পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরমধ্যে দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে দেশটি।
এসব ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তিনবার তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবে বলেও তখন হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু গত শুক্রবার মর্টারশেল ও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে হতাহতের পর উদ্বেগ বেড়ে যায়। এ ঘটনায় এক মাসে চতুর্থবারের মতো গত রবিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।