বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরুবা ইসলামকে দ্রুত অপসারণ এবং ভূমি রেজিস্ট্রেশনে হয়রানি বন্ধসহ ১৪ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বান্দরবান সচেতন নাগরিক সমাজ। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় আলীকদম শহরের বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে উপজেলা সদরের হোটেল হিলবার্ডের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের সামনে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। তিনি ফুটবল খেলায় পুরস্কারের ট্রফি ভেঙে শুধু খেলোয়াড়ই নয়, সমগ্র বান্দরবানবাসীকে অপমান করেছেন।
এ ছাড়া পার্বত্য এলাকায় ১৯০০ সালের হিলট্যাক্ট ম্যানুয়েল বাতিল করা, ভূমি রেজিস্ট্রেশনে হয়রানি বন্ধ করা, অতিরিক্ত পৌরকর আদায় বন্ধ করা, প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্প সমূহ পুনঃস্থাপন করা, জেলা মডেল মসজিদের জায়গা নির্ধারণ করা ও সাত উপজেলার মডেল মসজিদগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত সমাপ্ত করাসহ ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান করেন।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ। আব্দুস শুক্কুরের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নাসির উদ্দিন, ইকবাল মাহমুদ, নুরুল আলম, এরশাদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান আখন্দ, সামছু উদ্দিন, সামছুল হক সামু, নুরুল আবছার, মনিরুল ইসলাম, শাহ জালালসহ বান্দরবানের সচেতন নাগরিক সমাজ।
এই বিষয়ে ইউএনও মেহরুবা ইসলাম দাবি করেন, ফুটবলের ফাইনাল খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় কয়েকজন বলেছে, এই খেলার ট্রাইবেকারের গোল তারা মানে না। আবার খেলতে বললে সেটিও মানতে নারাজ। পরে তাদের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে কয়েকজন বলে ট্রফি দুটো ভেঙে ফেলতে। তাদের অনুরোধে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতেই ট্রফি ভেঙেছি।
তিনি আরও দাবি করেন, আমি আলীকদমে যোগদানের পর কিছু অবৈধ গরু পাচারকারীর গরু জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। যারা আন্দোলন করছে তারা কোনও খেলোয়াড় নন। বরং কতিপয় গোষ্ঠী যারা আমার কঠোর পদক্ষেপের কারণে অবৈধ ব্যবসা করতে পারছেন না তারাই এসব আন্দোলন করছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়ে কাপ ভাঙেন ইউএনও। এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।