চট্টগ্রামে জমে উঠেছে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা’। নগরের কাজির দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামে এই মেলা শুরু হয় গত ১ ডিসেম্বর। মেলা চলবে পুরো ডিসেম্বর মাস। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদ ১৯৮৯ সালের পর গত ৩৩ বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করে আসছে।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, মেলায় পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়াও আছে থ্রি-পিস, জুতা, বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, নকশি কাথা, কাশ্মীরি শাল ও কার্পেটসহ আছে ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ। এছাড়া শিশুদের খেলনা, প্লাস্টিক পণ্য, কসমেটিকস পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। প্রতিবারের মতো এবারও পসরা সাজিয়ে বসেছে পঞ্চরসের আচার ও শ্বশুরবাড়ির পিঠা। মেলায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতার আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন স্টলে একটি পণ্য কিনলে একই রকম আরও একটি পণ্য ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।
মা নাসিমা গার্মেন্টস নামে একটি স্টলের কর্মচারী মো. ফেরদৌস বলেন, ‘থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে। যেকোনও একটি পণ্য কিনলে একটি আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এবারের বিজয় মেলা জমে উঠেছে। সকালে লোকজনের ভিড় কিছুটা কম থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ে ক্রেতাদের ভিড়। বিকালের পর সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচা-কেনা।’
সাদিয়া ইসলাম নামে মেলায় আসা এক নারী বলেন, ‘প্রতি বছর বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রমী নানা পণ্য মিলে এ বিজয় মেলায়। এ কারণে আমরাও অপেক্ষায় থাকি কখন বিজয় মেলা আসবে। আমরা এখান থেকে কেনাকাটা করবো।’
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে ১৯৮৯ সালের পর গত ৩৩ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ এবার অসংখ্য অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করছে। যার মধ্যে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র প্রদর্শন, বিজয় শিখা প্রজ্বালন, বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি ও নারী সমাবেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় এম এ আজিজ স্টেডিয়াম গোলচত্বর সম্মুখে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় শিখা প্রজ্বলন করা হবে। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা। ১৫ ডিসেম্বর বিজয় মেলার প্রয়াত চেয়ারম্যান সাবেক সফল চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।’