চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে বসবাস করা ৮০০ পরিবারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন পাহাড় থেকে এসব বসতিদের সরানো হয়। এর মধ্যে ১০০ পরিবারকে নেওয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের সরে যেতে করা হচ্ছে মাইকিং।
জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, ‘পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে সরে যেতে শনিবার (৫ আগস্ট) বিকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। শনিবার রাতে জেলা প্রশাসকের চেষ্টায় আড়াইশ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সকাল থেকে আকবরশাহ থানাধীন বিজয়নগর, ঝিল-এক, দুই এবং তিন এবং শান্তিনগর, বেলতলীঘোণা থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০ পরিবারকে সরানো হয়েছে। মতিঝরনা থেকে সরানো হয়েছে ৩০০ পরিবারকে। ১০০টি পরিবারকে নেওয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে ছয়টি সার্কেলের মধ্যমে ভাগ করে পাহাড় ও মানুষের জানমালের রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। প্রতিদিন মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘পাহাড়ে যাতে মানুষকে যাতে আর প্রাণ দিতে না হয় সে জন্য কাজ করছি। মাইকিং থেকে শুরু করে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছে। চট্টগ্রামের সব পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত কয়েকদিন আগে বেলতলীঘোণায় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বসবাসরতদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে ও নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। পাহাড় রক্ষায় জেলা প্রশাসন জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে। ব্যক্তি বা সরকারি যার মালিকানায় পাহাড় থাকুক যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে রবিবারও ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরী। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই নগরীর বাসিন্দাদের।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্বের চব্বিশ ঘণ্টায় ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। অপরদিকে আমবাগান আবহাওয়া অফিস উক্ত সময়ে ২১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।’
তিনি জানান, বৃষ্টিপাত ৮ আগস্ট পর্যন্ত টানা থাকবে। এ সময় পাহাড় ধসের আশঙ্কা আছে। তবে ৯ আগস্ট থেকে বৃষ্টিপাত কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।