সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিকরা শিগগিরই মুক্তি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘শুধু এটুকুই বলি, নাবিকরা খুব শিগগির মুক্তি পাবেন। জাহাজটাও মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারবো। জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। কারণ, সোমালিয়ার জলদস্যুরা বাংলাদেশের নাবিকদের ওপর কোনও নির্যাতন চালায়নি। তারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে নাই। কিন্তু বিএনপি তো মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীদের নেতৃত্বে বিএনপি অনেক সময় সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।’
শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি চত্বরে চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশের মানুষ খুব দুঃখ-কষ্টের মধ্যে আছে, সাধারণ মানুষ ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হয়তো মির্জা ফখরুল সাহেবদের মনে শান্তি নাই। উনাদের মনে অশান্তি বিধায় বাংলাদেশের মানুষের মনে শান্তি নাই বলছেন। মানুষের মনে সম্প্রীতি ও উৎসব আছে। এবার ঈদ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। মানুষ এখনও ঈদ উৎসবের মধ্যে আছে। আপনারা দেখেছেন ঈদযাত্রাও এবার অনেক নির্ঝঞ্ঝাট ছিল। ঈদের সময় অনেক ঘটনা ঘটে। সে ধরনের দুর্ঘটনা এবার অপেক্ষাকৃত অনেক কম ঘটেছে।’
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন এবং আমরাও বলি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকে ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ করে চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসবে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সবাই শামিল হয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম যার যার, উৎসব যে সবার—সেটি বাস্তবে এই উৎসবের মাধ্যমে রূপায়িত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন প্রবারণা পূর্ণিমার সময় ফানুস ওড়ানো হয় তখন সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবে সামিল হয়, ছোটবেলা থেকে আমি নিজেও ফানুস ওড়ানো উৎসবে সামিল হতাম। একইভাবে যখন দুর্গাপূজা উৎসব হয়, তখনও সব সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে সামিল হয়। অর্থাৎ আমরা এখানে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সবাই মিলেমিশে একাকার।’
এই দেশে কোনও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান হবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা প্রথম জনসভা করে জনসমক্ষে ঘোষণা করেছেন এই লালদীঘির ময়দানে। এর আগে ছয় দফা ঘোষণা করেছিল, কিন্তু জনসভা করেছিল ছয় দফার ওপরে লালদীঘির ময়দানে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম থেকে প্রথম বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেছিলেন এম এ হান্নান। এই দেশে কোনও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান হবে না। কেউ সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে। সবসময় করেছি, ভবিষ্যতেও করবো। এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনও স্থান নেই।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব আয়োজক কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, কাউন্সিলর রুমকি সেন গুপ্তা, চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ও মো. শাহাবুদ্দিনসহ আয়োজক কমিটির নেতারা।
