ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার ফেসবুকে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর ও চাঁদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উত্তর চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জ বাজারের বটতলা এলাকায় ইউপি পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রায়পুর ও হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা, পরিস্থিতি থমথমে বিরাজমান।
আহতদের মধ্যে বিএনপি নেতা লিটন হাওলাদার, মর্তুজা মাহি, জয়নাল, হেলাল, কাউছার, ইশা রুহুল্লা, মামুন, কালাম বলি, এল এক্স সোহেল ও আল আমিন মামুনকে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর ও চাঁদপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের রায়পুরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর চরআবাবিল ইউপির স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আল আমিন মামুন তার ফেসবুক ওয়ালে একই ইউনিয়ন সভাপতি আবদুল বাসেদ হাওলাদারকে নিয়ে বাজে মন্তব্য লেখেন। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাসেদ হাওলাদারের নাতি বিএনপির কর্মী মর্তুজা মাহি তার অনুসারীদের নিয়ে হায়দরগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবস্থান করছিলেন।
এসময় মাহির প্রতিপক্ষ সর্দার গোষ্ঠীর উত্তর চরআবাবিল ইউপির স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আল আমিন মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক কালাম বলি ও এলএক্স সোহেলের নেতৃত্বে তাদের ২০-২৫ জন অনুসারী বিএনপির সভাপতি বাসেদ হাওলাদারের ছেলে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক লিটন হাওদার, তার ছেলে যুবদল নেতা মর্তুজা মাহিসহ তার লোকজনের ওপর লোহার পাইপ, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
তাদের মধ্যে মাহির চোখ ও জয়নাল মাথায় বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। মাহিকে চাঁদপুর চক্ষু ও জয়নালকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও বাকি ৬ জনকে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে রায়পুর সরকারি হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মাহির হোসেন জানান।
এ ঘটনায় আল আমিন মামুন ও লিটন হাওলাদার একে অপরের বিরুদ্ধে পারস্পারিক বক্তব্য দিয়েছে। তারা উভয় নেতা বলেছেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও রায়পুরের সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়াসহ দলের উপজেলার নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা তারা মাথা পেতে নেবেন।
এ ঘটনায় রায়পুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে উত্তর চরআবাবিল ইউপির বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল বাছেদ হাওলাদারের পক্ষের এবং সর্দার গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক আল আমিন মামুন ও কালাম বলির লোকদের মধ্যে মিছিল ও মারামারি হয়। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মীমাংসা করে দিয়েছি। প্রয়োজনে দুই গ্রুপকে নিয়ে আবার বসবো।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, উত্তর চরআবাবিল ইউপির বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে হায়দরগঞ্জ বাজারে দুই গ্রুপের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেছে। তবে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি।