কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে তহবিল সংকটের কারণে ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন পরিচালিত সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চার হাজার স্থানীয় (বাঙালি) শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। এর ফলে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী ঝুঁকিতে পড়েছে।
হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে উপজেলা প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
ইউনিসেফ কক্সবাজার ফিল্ড অফিসের প্রধান এনজেলা কার্নে ও সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা এক যৌথ চিঠিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) বরাবর এই কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, ‘উখিয়ার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পে সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মোট ৮ হাজার শিক্ষক রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪ হাজার স্থানীয় ও ৪ হাজার রোহিঙ্গা। এর আগেই ১২০০ বাঙালি শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু এবার পুরো শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় সব স্থানীয় শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন।
আরআরআরসি কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন বলেন, ‘শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত স্থানীয় শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের চাকরি রক্ষা ও তহবিল চেয়ে আমরা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছিলাম। এর মধ্যেই শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা আসে।’
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক অবরোধ করলে আমরা দ্রুত হস্তক্ষেপ করি এবং সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।’
উনচিপ্রাং ক্যাম্পের আন্দোলনকারী শিক্ষক মোহাম্মদ করিম বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিক্ষকদের রেখে আমাদের স্থানীয় শিক্ষকরা বিনা নোটিশে চাকরি হারিয়েছেন। আমরা আগে আন্দোলন করেছি, এখনও চাকরি ফিরে না পেয়ে আবারও পথে নেমেছি।’