চট্টগ্রাম মীরসরাইয়ে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধে ভাগিনার হাতে আপন মামা নিহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম মোহাম্মদ হারুন (৫১)। বুধবার (৯ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় উপজেলার মীরসরাই সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম তালবাড়িয়া এলাকার নাদু সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। হারুন ওই বাড়ির সেকান্তর মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার সরদার আনোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার বাড়ির জায়গা-জমি সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আমাকেসহ আরও কয়েকজনকে হারুন ও তার বোন শাহানা তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। পরে আমিসহ গ্রামের আরও কয়েকজন বিকালে তাদের বাড়িতে যাই। হারুনের ঘরের পানি তার বোনের ঘরের ওপর পড়ে- এ বিষয়ে তার বোন অভিযোগ করেন। আমরা হারুনকে টিনের পানি তার বোনের ঘরে না পড়ার জন্য পাইপ দিতে বললে সে রাজি হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে হারুন তার ভাগিনা শাহিন আলমকে একটি চড় মারে। এরপর শাহিন ও তার মা দৌড়ে গিয়ে ঘরের ভেতর চলে যায়। পুনরায় শাহিন আলম সে ঘর থেকে বের হয়ে এসে তার মামার বুকের ওপর ছুরি মেরে দেয়।
তিনি বলেন, শাহীন ধারালো ছুরি দিয়ে তার মামা হারুনের শরীরে একাধিক জখম করেন। আমি দৌড়ে গিয়ে হারুনকে জড়িয়ে ধরি। উপস্থিত লোকজন নিয়ে তাকে আহতাবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সেকান্তার মিয়ার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছেন। বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে আলাদা ঘর করে বাবার বাড়িতে থাকেন। হারুন দুই মাস আগে আরব আমিরাত থেকে দেশে আসে। আগামী ২০ জুলাই তার পুনরায় বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল।
নিহত হারুনের ভাতিজা মহিউদ্দিন বলেন, আমার জেঠাকে জায়গা-জমি সংক্রান্ত ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমার ফুফাতো ভাই শাহীন ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে তিনি মারা যান। আমার জেঠার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আর্য্যরাজ দত্ত বলেন, ছুরির আঘাতে বুকের বাম পাশে মারাত্মক জখম হয় এবং রক্তক্ষরণ হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগের মোহাম্মদ হারুন মারা যান।
মীরসরাই থানার এসআই তোফাজ্জল হোসেন বলেন, জায়গা-জমি সংক্রান্ত ঝামেলায় হারুনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। সুরতহালে তার শরীরে বুকের বাম পাশে এবং হাতে ধারালো ছুরির জখম পাওয়া গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।