X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

বোরো ধানে ‘ব্লাস্ট’ আক্রমণে বিপাকে শ্রীপুরের কৃষকরা

রায়হানুল ইসলাম আকন্দ, গাজীপুর
১৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:৫১আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৫:৫৫

 

বোরো ধানে ‘ব্লাস্ট’ আক্রমণে বিপাকে শ্রীপুরের কৃষকরা
চলতি বোরো মৌসুমে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ধানে ছত্রাকজনিত ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এখানকার চাষিরা। এ মৌসুমে বোরো ধান চাষ করে খরচ উঠাতে না পেরে তারা এখন লোকসান গুনছেন।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামের বর্গাচাষি আব্দুল হামিদ প্রতি বছর অন্যের জমি বর্গা করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালান। ধারদেনা করে এবারও প্রায় এক একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন তিনি। জমিতে সবুজ ধান গাছের চারা দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন এ বছরটা ভালো কাটবে। কিন্তু ধানের ছড়া বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাতাগুলো বাদামি আবার কখনও সাদা বর্ণের হওয়া শুরু করে। কিছুদিন পর থেকে ছড়ার গোড়ার অংশে কালো হয়ে ধানের ছড়াটাও বাদামি ও সাদা বর্ণের হতে লাগে। পরে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে জমিতে ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করলেও কোনও কাজ হয়নি।

চাষি আব্দুল হামিদ জানান, এক একর জমির ধান কাটার খরচ পড়বে ৯ হাজার টাকা। খড় পাওয়া যাবে ৬ হাজার টাকার। খড় বাঁচাতে গেলেও তিন হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে।

এ চিত্র শুধু চাষি আব্দুল হামিদেরই নয়, তার মতো অনেক চাষি রয়েছেন শ্রীপুরে, যাদের বোরো আবাদ নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ধানক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা গেছে। গত তিন বছর আগে থেকে এ উপজেলায় রোগটি দেখা দেয়। কিন্তু চলতি বছর তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি চাষিদের। ফলে উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় এবার ফলন না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তারা।

উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের কৃষক আলতাফ মাহমুদ জানান, তিনি দুই একর ৩৫ শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। পাঁচ একর বর্গা দিয়েছেন। নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে এবার বোরোর ফলন পাবেন না তিনি। জমির ধান গাছ সাদা ও ধূসর বর্ণ ধারণ করেছে। ধান পরিপক্ব হওয়ার আগেই চিটা হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, গত বছর প্রতি একরে ৬০ মণ ধান পেয়েছিলেন তিনি। এবার ৬ মণও পাবেন না। ধানের খড় জোগাড় করতেও এবার ধান গাছ সংগ্রহ করবেন না।
প্রতি একরে উৎপাদন খরচ ৩৩ হাজার টাকায় আবাদ করেছিলেন একই গ্রামের সাহাজ উদ্দিন মোড়ল। কিন্তু এবার সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

দুই একর ৩৫ শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন পটকা গ্রামের মো. হামিদল ইসলাম ও তার ছেলে মাসুম আরমান। ধানগুলো মরে জমিজুড়ে সাদা বর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিদিন কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রায় নানা জাতের ওষুধ ছিটাচ্ছেন জমিতে। কিন্তু কোনও কাজে আসছে না। এখন সংসার খরচ কীভাবে জোগাড় করবেন সেই দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে তাদের।
শ্রীপুর উপজেলার উপ-সহকারী ‍কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, ‘এবার শ্রীপুর উপজেলায় ১২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের পরও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ’

তিনি কৃষকদের অভিযুক্ত করে বলেন, ‘কৃষকেরা নিয়ম মেনে ওষুধ প্রয়োগ করেন না। জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি হলেও এ রোগের আক্রমণ ঘটে। প্রথমে ধানের পাতা পরে ধান গাছের গিঁটে ও সবশেষে শীষে এ রোগের আক্রমণ দেখা দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধান গাছে আক্রমণের পর ন্যাটিভো, ডাইমেনশন, ফিলিয়া জাতীয় ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়।

/এআর/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
বেড়িবাঁধে উন্নত নিরাপত্তা ও গতিশীলতা: মেয়র আতিকের কাছে ইউল্যাবের আবেদন
বেড়িবাঁধে উন্নত নিরাপত্তা ও গতিশীলতা: মেয়র আতিকের কাছে ইউল্যাবের আবেদন
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা