X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

স্প্লিন্টারের যন্ত্রণায় সেই ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারেন না নাজিম

বিজয় রায় খোকা, কিশোরগঞ্জ
২১ আগস্ট ২০২১, ১৩:২২আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২১, ২০:০৬

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় আইভি রহমানের ডাকে ভৈরব থেকে অনেকের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন আকবরনগর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন। সেদিন গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। এখনও তার শরীরে অজস্র স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন। ভুলতে চাইলেও স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা বারবারই তাকে সেই দিনের  বীভৎসতার কথা মনে করিয়ে দেয়।

বাংলা ট্রিবিউনকে নাজিম উদ্দিন ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘আইভি রহমান ভৈরবের গর্ব। তার ডাকে ভৈরববাসী সব সময় একত্র হতো। তার নির্দেশে আমরা অনেকেই সেদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। মঞ্চের নিচে আইভি রহমানসহ অনেক নেতাকর্মী বসেছিলেন। আমি এক বোতল পানি এনে আপাকে দিলাম। পাশে দাঁড়িয়ে আপার সঙ্গে কথা বলছিলাম। বক্তব‌্যর শেষ পর্যায়ে মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বললেন, এখন র‌্যালি হবে। ট্রাকের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা অপেক্ষা করছি। সে সময়ই হঠাৎ একটি বিকট আওয়াজ শুনলাম। তখনই দেখলাম আইভী আপা হেলে পড়ে যাচ্ছেন, আমি লাফ দিয়ে তাকে ধরতে গেলাম। আবার বিকট শব্দ হলো। তারপর আমিও অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলাম। পরে যখন জ্ঞান ফিরলো আমি দেখি, কয়েকটি লাশের সঙ্গে আমি পড়ে আছি।’

কে বা কারা নাজিম উদ্দিনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান কিছুই জানেন না তিনি। অবস্থা খারাপ দেখে পরে তাকে রেনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নয় দিন দেশে চিকিৎসা শেষে শেখ হাসিনার উদ‌্যেগে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন‌্য ভারতের পিয়ারল‌্যাস হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিন মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন তিনি।

নাজিমের শরীরে এখনও শতাধিক স্প্লিন্টার রয়েছে। এতগুলো স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা শরীরে নিয়ে এখন আর কাজ করতে পারেন না তিনি। প্রায়ই যন্ত্রণা বাড়ে। শীতে তা চরম পর্যায়ে চলে যায়। প্রতি মাসে প্রায় নয় হাজার টাকার ওষুধ খেতে হয় তাকে। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে মাসে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয় নাজিম উদ্দিনকে।

ভারত আসার সময় সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছিলেন, কিছুদিন পর আবার সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করাতে। আর্থিক সামর্থ‌্য না থাকায় আর যাওয়া হয়নি সেখানে। বর্তমানে কিডনিরও সমস‌্যা দেখা দিয়েছে তার। স্ত্রীসহ পরিবারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে ঢাকার মীরপুরে খুব কষ্টে বসবাস করছেন তিনি।

সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘এ হামলায় যারা জড়িত তাদের বিচার না করলে আমরা শান্তি পাবো না। আমার চিকিৎসার দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আমাকে উন্নত চিকিৎসার ব‌্যবস্থা করে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিন। সারা শরীরে অজস্র স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা সহ‌্য করা খুব কঠিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমাদের খোঁজ খবর রাখেন। ওষুধের জন‌্য প্রতি মাসে আমাকে পাঁচ হাজার করে টাকা করে দেন। এই টাকাটা না পেলে এতদিন আমার বেঁচে থাকাই কঠিন হতো।’

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
ঢাকায় পুনর্মিলন সেরে ক্যাঙ্গারুর দেশে...
ঢাকায় পুনর্মিলন সেরে ক্যাঙ্গারুর দেশে...
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ