নরসিংদীর রায়পুরায় চাঞ্চল্যকর শিশু ইয়ামিন হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গেমিং ল্যাপটপ কিনতে ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যা করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে তারা৷
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো উত্তর বাখরনগর গ্রামের সিয়াম উদ্দিন (১৮), রাসেল মিয়া (১৯), মো. সুজন মিয়া (২৪) ও কাঞ্চন মিয়া (৫২)। নিহত ইয়ামিন (৮) রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর মধ্যপাড়া এলাকার প্রবাসী জামাল মিয়ার ছেলে।
নিখোঁজের পাঁচ দিন পর শুক্রবার সকালে উত্তর বাখরনগর গ্রামের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সাহেব আলী পাঠান সাংবাদিকদের বলেন, টিভিতে ভারতের সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেমিং ল্যাপটপ কেনার টাকা জোগাড় করতে ২৮ নভেম্বর ইয়ামিনকে খেলার ছলে অপহরণ করে একই এলাকার সিয়াম উদ্দিন ও পিরিজকান্দি এলাকার রাসেল মিয়া। পরে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে ভিপিএনের মাধ্যমে ইয়ামিনের মা সামসুন্নাহারের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে অপহরণের দিন সন্ধ্যায় বালিশচাপা দিয়ে শিশুকে হত্যা করা হয়। পরে সিয়ামের বাড়ির গোয়ালঘরে বস্তাবন্দি করে লাশ লুকিয়ে রাখা হয়। চার দিন পর রাতের অন্ধকারে লাশটি গ্রামের একটি ডোবায় ফেলে দেয়।
অপহরণের তিন দিন পর ইয়ামিনের মা সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে রায়পুরা থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এরই সূত্র ধরে শনিবার ভোরে উত্তর বাখরনগর এলাকা থেকে সিয়াম উদ্দিন ও পিরিজকান্দি এলাকা থেকে রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাদের কাছ থেকে স্কচটেপ, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি বালিশ উদ্ধার করা হয়। যা ইয়ামিন হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে তারা।
এ ঘটনায় সম্পৃক্ত সুজন মিয়া ও কাঞ্চন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।