বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে সাভার উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ব্যানার ঝুলিয়ে তালা দিয়েছেন এক ছাত্রদল নেতা। একইসঙ্গে ব্যানার ঝোলানো ও তালা দেওয়ার সময়ে ফেসবুকে লাইভ করেন ওই নেতা। বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম সজীব রায়হান। তিনি ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব।
সজীব রায়হানের ফেসবুক আইডি থেকে করা ১০ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের লাইভে দেখা যায়, ‘সজীব বিএনপি নেতাদের ছবি সংবলিত একটি ব্যানার উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে ঝুলিয়ে দিচ্ছেন। সেইসঙ্গে একটি তালা লাগিয়ে দিচ্ছেন। পরে মোবাইলটি নিজের কাছে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করছেন।’
মোটরসাইকেল থেকে লাইভে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘অবশেষে অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সাভার উপজেলা পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ওবায়দুল কাদের, আপনাকে বলতে চাই, আপনারা এই দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। আপনারা দ্রুত পদত্যাগ করুন।’
তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের একসময়ের ক্যাডার মনজুরুল আলম রাজীব যেখানে বসেন, তার অফিসে তালা দিয়ে এসেছি। রাজীবকে বলতে চাই, প্রায় এক লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সাভারে প্রায় চল্লিশটি বাড়ি করেছেন। এর হিসাব আপনাকে দিতে হবে। আপনি অতি দ্রুত দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চান। ক্ষমতাসীনরা অতি দ্রুত পদত্যাগ না করলে দেশের সব উপজেলায় তালা দেওয়া হবে।’
সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজীবকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সজীবকে বলতে শোনা যায়, ‘যদি এক দফা দাবি সমর্থন করেন। তাহলে ওই তালা খুলবেন না। আর যদি সমর্থন না করেন ক্ষমতার বড়াই দেখান, তবে বলতে চাই আমার হাতে চাবি আছে। এই চাবিটি নিয়েই ওই তালা খুলবেন। আমি পরবর্তী কর্মসূচিতে এই চাবি দেখাবো। যদি সুযোগ হয়, এর মধ্যেই চাবিটি খুঁজে নেবেন। আজ যে ভবনের ফটকে তালা ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে, সেটির দ্বিতীয় তলায় সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম রাজীবের দাফতরিক কার্যালয়।’
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম রাজীব বলেন, ‘উপজেলার যে মূল ভবন, সেটা তালা দেওয়াই থাকে। কর্মচারীরা সকাল ৯টার আগে খুলে ফেলেন। ওই ছেলে দুই সেকেন্ড এসে কী করছে, বুঝিনি। বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এটি করেছে সে। আমরা ওই ছেলের পুরো পরিবারের খবর নিলাম। সে ফুটনগরে থাকে। ছেলেটি মাদকাসক্ত। এর আগে গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেখানে নাকি লাইভ করেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা যারা এসব অপপ্রচার পছন্দ করে না, তারা হয়তো ওই ছেলের বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আজ।’
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে আমাদের পরিছন্নতাকর্মীরা পরিষদ ভবনের সামনে ফটকে এলে তারা একটি ব্যানার ও একটি চাবিসহ তালা গেটের পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সংগ্রহ করে তা রেখে দেওয়া হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে বিষয়টি আমরাও তদন্ত করে দেখছি, আসলে কী হয়েছে।’