গাজীপুরে বিক্ষোভ-সমাবেশের পর মুক্তি পেয়েছেন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার ‘নায়েবে আমির’ মো. মহিবুল্লাহ (৪৮)। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কারা ফটকে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন মহিবুল্লাহর অনুসারীরা।
মহিবুল্লাহর অনুসারীরা জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও ভোলার মাদ্রাসাশিক্ষক মাওলানা মহিবুল্লাহকে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে আটকে রাখায় ‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’ ব্যানারে কাশিমপুর কারাগারের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। এ সময় জেল সুপার ও জেলারের বিরুদ্ধে আদালতের রায় অবমাননার অভিযোগ করেন তারা। সেইসঙ্গে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
‘বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন’ ব্যানারে ডাকা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোলার একটি মাদ্রাসার জনপ্রিয় শিক্ষক মাওলানা মহিবুল্লাহ ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিলাইছড়ি থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেফতার হন। তিনি ভোলা সদর থানার চরসিফলি গ্রামের আব্দুর রব মাস্টারের ছেলে। ওই মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান তিনি। তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানা ও বিলাইছড়ি থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে। ওই দুই মামলায় আগেই জামিন পান। উচ্চ আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র চার দিন আগে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। কিন্তু জামিনের কাগজ পাওয়ার পরও তাকে মুক্তি না দিয়ে আটকে রাখে কারা কর্তৃপক্ষ।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাওলানা মহিবুল্লাহকে মুক্তি না দিয়ে কারাগারে আটক রেখে জেল সুপার ও জেলার আদালতের রায় অবমাননা করেছেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কারাগারের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছি আমরা। বিকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালীন প্রিজনভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কারাগারে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা কারাগারের মূল ফটকের সামনে জোহরের নামাজ আদায় করেছেন। এ অবস্থায় বিকাল ৪টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এই আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছার পরে মাওলানা মহিবুল্লাহকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার কোনও সুযোগ নেই। আমাদের আন্দোলনের মুখে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাকে নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরছি।’
মুক্তি পাওয়ার পর মাওলানা মহিবুল্লাহ আন্দোলনকারী অনুসারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কারাগারের সাবেক জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা আমাকে কারাগারে নানাভাবে নির্যাতন করেছেন। আমাদের নির্যাতন করার জন্যই নাকি তাকে এই কারাগারের জেল সুপার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এত কিছুর পরও তাকে শুধু বদলি করা হয়েছে, এটি কী যথেষ্ট। চাকরিচ্যুত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমি।’
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদেরকে নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়। জামিনের কাগজপত্র পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করেই মাওলানা মহিবুল্লাহকে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’