গাজীপুরের শ্রীপুরে চালক ফালান মিয়াকে (২৫) হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর মধ্যে তিন জন হত্যায় সরাসরি জড়িত, আরেকজন সহায়তা করেছে এবং অপরজন ছিনতাইকৃত অটোরিকশা কিনেছে। তবে সহায়তাকারী পলাতক রয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত ফালান মিয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার লংগাইর ইউনিয়নের চারবাড়িয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকায় থেকে ভাড়া অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ভালুকা উপজেলার কয়সেরকুল গ্রামের আবুল কাশেম সাগর (২২), দেলদুয়ার উপজেলার জোনকাই (আলালপুর) গ্রামের আবুলের ছেলে শাহীন (২০), ময়মনসিংহের সোনাখালী এলাকার সেলিমের ছেলে আরিফ হোসেন (১৮) এবং একই জেলার বনপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে ভাঙারি ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী (৪৪)। তারা শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখন্ড (দারগাচালা) এলাকায় পৃথক বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর জেলা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) সনজিৎ বিশ্বাস বলেন, গত রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় ফালান মিয়া শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া মক্কা-মদিনা সুমনের গ্যারেজ থেকে ভাড়ায় অটোরিকশা নিয়ে বের হন। সাগর, শাহিন, আরিফ এবং তাদের সহযোগী পলাতক নাঈম রাত সাড়ে ১১টায় মাওনা চৌরাস্তা থেকে ফালান মিয়ার অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে বারতোপায় যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ফালান। দুদিন পর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় স্ত্রী রিনা আক্তার জানতে পারেন উপজেলার দক্ষিণ বারতোপা এলাকায় গজারিবনে স্বামীর লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় মামলা করেন রিনা।
সনজিৎ বিশ্বাস বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শ্রীপুরের মাওনা এলাকা থেকে শুক্কুর আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাগর ও শাহীনকে কোনাবাড়ীর আমবাগ এবং আরিফকে কেওয়া পশ্চিমখন্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে সাগর ও শাহীন অটোচালককে শ্বাসরোধে হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করে। তারা অটোরিকশা থেকে ব্যাটারি খুলে শুক্কুর আলীর দোকানে ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল। মূলত অটো ছিনতাইয়ের জন্যই চালককে হত্যা করেছিল বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ভাঙারি ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী (৪৪) অটোরিকশা কিনেছে বলে স্বীকার করে। তাদের সহযোগী পলাতক নাঈমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।