নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় দায়েরকৃত চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হায়দার আলী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে রিয়াদ চৌধুরীর রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়ার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় রিয়াদের অনুসারীরা হামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন আব্দুল বারী।
গ্রেফতার রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান বলেন, ‘রিয়াদ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল। শুনানি শেষে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।’
এর আগে গত ১৫ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এদিন সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘চাঁদা না দিলে ফ্যাক্টরি পুড়িয়ে দেওয়া হবে’ রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর এ সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। ওই অডিও ক্লিপে আজাদ হোসেন নামের নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ীকে চাঁদার জন্য রীতিমতো হুমকি দিতে শোনা যায় রিয়াদকে। তবে রিয়াদ গ্রেফতারের পর আজাদ হোসেন মামলা করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তিনি আমার আত্মীয়। পরবর্তীতে চাঁদাবাজির ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় রিয়াদকে এক নম্বর আসামি করা হয়।
এদিকে, রিয়াদ চৌধুরীর রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেওয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়ার ওপর হামলা করা হয়। এ বিষয়ে আব্দুল বারী বলেন, ‘রিমান্ড শুনানিতে আদালত পরিদর্শক আমাকে সহযোগিতা করতে বলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নিয়ে বক্তব্য রেখেছি। আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে দুই দিনের মঞ্জুর করেন বিচারক। রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আমি আদালতের কক্ষ থেকে বের হওয়ার পরই রিয়াদ চৌধুরীর ক্যাশিয়ার আমির হোসেন, সহযোগী হারুনুর রশিদ, আব্দুল মান্নান, সাগর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন আমার ওপর হামলা করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তখন আমাকে পাশের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের কক্ষে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। বিষয়টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে জানালে তিনি পুলিশের নিরাপত্তায় আমাকে চেম্বারে পৌঁছে দিতে বলেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইনজীবী আব্দুল বারীর ওপরে হামলার পর আদালতের নির্দেশে তাকে তার চেম্বারে দিয়ে এসেছে পুলিশ।’