নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলায় কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটের দরপত্র ক্রয় নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদর উপজেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, বিএনপি নেতা লাভলু, সালাউদ্দিন, হানিফ ও আরিফসহ ১৫ জন। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ১৫টি পশু বিক্রির অস্থায়ী হাটের দরপত্র বিক্রি শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় কয়লাঘাট পশুর হাটের দরপত্র কিনে বাইরে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা লাভলুর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় লাভলু ও হানিফসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
বিকেলে ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার উপজেলা প্রাঙ্গণে আসেন। এ সময় তার সামনে একদল সন্ত্রাসী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে তিনি প্রতিবাদ করেন। এতে সন্ত্রাসী বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারধর করেন। বিষয়টি রুহুল আমিন শিকদারের লোকজন জানতে পেরে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে কয়েকজনকে পিটুনি দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে পুলিশ দফায় দফায় লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় অন্তত ৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে একাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রুবেল আহমেদের লোকজন সকাল থেকে উপজেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করে। এ সময় কয়লাঘাট এলাকার পশুর হাটের দরপত্র যারা কিনেছে তাদের উপর হামলা করে রুবেল মেম্বারের লোকজন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোগনগর ইউনিয়নের সদস্য রুবেল মিয়ার ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা নেই। তবে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে। যাচাই-বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাচাই-বাছাইয়ের আগে আটকের সংখ্যা বলা সম্ভব হবে না।’
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এদিন সদর উপজেলার ১৫টি পশু বিক্রির অস্থায়ী হাটের দরপত্র বিক্রি হয়েছে। এই দরপত্র কেনা নিয়ে সন্ধ্যার সময়ে কে বা কারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুনেছি, ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনকে পুলিশ আটক করেছে।’