X
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
৩১ বৈশাখ ১৪৩২

খুলনায় আবারও বাড়ছে যক্ষ্মা রোগী

খুলনা প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২২, ১৮:৪৯আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২২, ১৯:০২

খুলনা বিভাগের ১০টি জেলায় আবারও যক্ষ্মা রোগী বেড়েছে। ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ছয় হাজার। য্ক্ষ্মা থেকে রক্ষা পেতে কাশি হলেই অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে শনাক্ত হয় ৩৮ হাজার ৫২৭ জন। ২০২০ সালে শনাক্ত কমে দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৭৯০ জনে। ২০২১ সালে আবারও বেড়ে যায়। এ বছর ৩৯ হাজার ৭৯৬ জনের যক্ষ্মা শনাক্ত হয়। ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে যক্ষ্মা রোগী বেড়েছে ছয় হাজার। আর ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২১ সালে বেড়েছে এক হাজার। 

খুলনা বিভাগীয় যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ মেহেদী বিন জহুর বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের তিন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। নতুন রোগীদের জন্য ক্যাটাগরি-১, দ্বিতীয়বার শনাক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে রি-ট্রিটমেন্ট ক্যাটাগরি-১ এবং ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীদের জন্য পৃথকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অর্থাৎ যে বাড়িতে যক্ষ্মা রোগী রয়েছেন সে বাড়ির অন্যদেরও চিকিৎসার আওতায় আনা হচ্ছে। যক্ষ্মা পরীক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা পর্যন্ত সবকিছুই বিনামূল্যে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, মূলত তিনটি লক্ষ্য নিয়েই সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথমত, ২০৩৫ সাল নাগাদ যক্ষ্মা রোগী শতকরা ৯৫ শতাংশ কমানো, প্রতি লাখে মৃত্যু ২২৫ থেকে কমিয়ে ২২ জনে আনা এবং বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এই তিনটি লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। যার অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের জন্য পরীক্ষাগারও বাড়ানো হয়েছে। ২০৩৫ সাল নাগাদ প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জিন এক্সপার্ট মেশিন স্থাপন এবং যাদের শরীরে টিবির জীবাণু আছে তাদের প্রিভেন্টিভ থেরাপি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্য রয়েছে। যার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে খুলনা বিভাগের সব জেলায় যেখানে জিন এক্সপার্ট মেশিনের সংখ্যা ছিল মাত্র ২০টি, সেখানে এখন হয়েছে ৫৭টি। 

আবার বিভাগের ১০৭টি স্থানে মাইক্রোস্কপিক মেশিনের মাধ্যমেও যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদরের জেনারেল ও সদর হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক ও হাসপাতালের পৃথক কেন্দ্রে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

ডা. শাহ মেহেদী বিন জহুর বলেন, চিকিৎসায় অন্তত ৯৬ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী ভালো হয় বলে আগের গবেষণায় দেখা গেছে। ২০১৫ সালে যেখানে চিকিৎসায় সুস্থতার হার ছিল ৯৩ শতাংশ, সেখানে ধীরে ধীরে বেড়ে বর্তমানে ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

যক্ষ্মা থেকে রক্ষা পেতে করোনায় আক্রান্তের মতো হাঁচি-কাশি থেকে মুক্ত থাকতে আক্রান্তকে মাস্ক পরা এবং তার নিকটবর্তী না হওয়ার পরামর্শ দেন ডা. জহুর। 

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মঞ্জুরুল মুরশিদ বলেন, যেহেতু আগের তুলনায় যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের মেশিনপত্র বেড়েছে, সেহেতু শনাক্তও বেড়েছে। যক্ষ্মার চিকিৎসায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, আগের চেয়ে এখন যক্ষ্মার চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটা বদলে গেছে। ইনজেকটেবল ওষুধের পরিবর্তে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। যক্ষ্মার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা হচ্ছে বিনামূল্যে। রোগীর পাশাপাশি আশপাশের লোকদেরও চিকিৎসার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ২০৩৫ সাল নাগাদ ৯৫ শতাংশ কমিয়ে আনার সরকারের যে লক্ষ্য, সেটা বাস্তবায়ন হবে।

/এসএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভাড়া বাসা থেকে বিজিবি সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ভাড়া বাসা থেকে বিজিবি সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জুলাই আন্দোলনের পরিস্থিতি তৈরি করে গণতন্ত্রকামী মানুষ: মঈন খান
জুলাই আন্দোলনের পরিস্থিতি তৈরি করে গণতন্ত্রকামী মানুষ: মঈন খান
রূপপুর প্রকল্পের আরও ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত
রূপপুর প্রকল্পের আরও ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত
সাবেক সেনা সদস্যদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করছে সেনাবাহিনী, ধৈর্য ধরার পরামর্শ
সাবেক সেনা সদস্যদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করছে সেনাবাহিনী, ধৈর্য ধরার পরামর্শ
সর্বাধিক পঠিত
বিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগবিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
রাতে চিয়া বীজ খেলে এই ৬ উপকার পাবেন
রাতে চিয়া বীজ খেলে এই ৬ উপকার পাবেন
বাড়লো স্বর্ণের দাম, বুধবার থেকে কার্যকর
বাড়লো স্বর্ণের দাম, বুধবার থেকে কার্যকর
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ