যশোরের হামিদপুরে ইজিবাইকচালক মফিজুর হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ মে) বিকালে অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। পাঁচ আসামির মধ্যে তিন জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান।
আদালতে উপস্থিত থাকা আসামিরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর বিশ্বাসপাড়ার মকছেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে ইখতিয়ার বিশ্বাস, মান্দারতলা গ্রামের বাসিন্দা ও মণিরামপুর উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের মৃত হাছিম সরদারের ছেলে খোরশেদ আলম, হামিদপুর দক্ষিণপাড়ার জালাল উদ্দিনের ছেলে কাজল।
পলাতক আসামিরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার ধানঘাটা গ্রামের বলরাম ঘোষের ছেলে গোপাল ঘোষ ও চাঁনপাড়া গ্রামের মফজ্জলের ছেলে এনামুল।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২২ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মফিজুর রহমান তার হেলপার নয়নকে নিয়ে পুরাতন কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড (মণিহার মোড়) থেকে বাড়ির পথে ফিরছিলেন। পথে হামিদপুরে হেলপার নয়নকে নামিয়ে তিনি বাড়ির দিকে চলে যান। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দুই দিন পর ২৪ জুন সকালে হামিদপুর ময়লার ভাগাড়ের পাশের একটি পুকুর থেকে মফিজুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, মফিজুর ও তার হেলপার নয়ন যখন বাড়ি ফিরছিলেন ঠিক সেসময় একটি নম্বর থেকে মফিজুর রহমানের কাছে কল আসে। পরে মফিজুরকে নয়ন জিজ্ঞাসা করেন কে ফোন করেছিল। এ সময় মফিজুর নয়নকে জানান, তাকে টাকা দেওয়ার জন্য ইখতিয়ার কল করে ময়লার ভাগাড়ের সামনে ডেকেছে। এই বলে সুলতানা ফিলিং স্টেশনের সামনে ইজিবাইক থেকে নেমে যান মফিজুর। নয়নকে ইজিবাইক নিয়ে চলে যেতে বলেন। এ সময় নয়ন দেখতে পান পাশের একটি মেহগনি বাগানের সামনে ৪/৫ যুবক দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন মফিজুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাসির উদ্দিন এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের শুরুতেই ইখতিয়ার ও খোরশেদকে আটক করেন। পরে তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে অপর তিন আসামির নাম। মূলত পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় মফিজুরকে। পরে লাশ ফেলে দেয়া হয় ঝুমঝুমপুর ময়লার ভাগাড়ের পেছনের একটি পুকুরে। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার মামলার রায় ঘোষণার দিনে বিচারক পাঁচ আসামিরই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।