জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ। এ বিধিনিষেধ আগামী ১ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত জারি থাকবে। বিষয়টি সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন জনপদে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের জানানো হয়েছে।
বন বিভাগ জানায়, এই তিন মাস কোনও বনজীবীকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হবে না। একইভাবে এ সময়ে কোনও পর্যটক সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় সুন্দরবনে ওপর নির্ভরশীল পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের প্রায় ৫০ হাজার বনজীবী ও ট্রলারচালক বেকার হয়ে পড়বে। প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় প্রতি জেলেকে সরকারিভাবে ৮০ কেজি করে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। তবে সুন্দরবনের জেলেদের জন্য সহযোগিতা না থাকায় নিষেধাজ্ঞার সময় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। এ কারণে তারা খাদ্য সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম জানান, জুন থেকে আগস্ট ট্রলারচালক, চালক সহযোগী ও পর্যটক গাইড সাবই বেকার হয়ে পড়ে। তাদের বিকল্প কোনও কাজ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। তিনি এই নিষেধাজ্ঞার সময় সুন্দরবনে কর্মরত জেলে ও বাওয়ালীসহ ট্রলারচালক, চালক সহযোগী ও পর্যটক গাইডদের খাদ্য সহযোগিতা ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, সারা বছর হাজার হাজার বনজীবী সুন্দরবন থেকে মাছ, কাঁকড়াসহ গোলপাতা ও মধু আহরণ করেন। তাই সুন্দরবনের বিশ্রাম দেওয়ার মাধ্যমে সেখানকার প্রকৃতি-প্রতিবেশসহ জীবপ্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার জন্য প্রতি বছর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা চেয়ে দুই বছর আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মৎস্য মন্ত্রণালয় থেকে বনজীবীদের তালিকাও নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এ সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যসহায়তা পাবেন প্রকৃত বনজীবীরা।