ঈদের দিন নিখোঁজ শিশুর পরদিন সকালে লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি পুলিশের। পুলিশ বলছে, শিশুটিকে (১১) তারই আপন ফুফাতো ভাই মাদ্রাসাছাত্র নাজমুস সাকিব নয়ন (১৯) ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকালে পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, ঈদের দিন নিখোঁজ শিশুর লাশ পরদিন (৮ জুন) সকালে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখে তার মামা চিৎকার দিলে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে নিহতের বাবা মেয়ের ঠোঁটে জখমের চিহ্ন ও রক্ত বের হতে দেখেন। বিষয়টি জানার পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পর ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে একটি টিম বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে নিহতের ফুফাতো ভাই নাজমুস সাকিব নয়নকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িতের কথা স্বীকার করে।
সে পুলিশকে জানিয়েছে, ঈদের দিন (৭ জুন) তার মামাতো ভাই রিয়াজকে মামাবাড়ি দিয়ে বাড়িতে এসে দেখে তার ছোট বোন তন্বী রুমে ঘুমিয়ে আছে আর বাইরে মামাতো বোন (শিশু) দোলনায় দোল খাচ্ছে। তাকে একা দেখে নয়নের যৌন বাসনা জাগে এবং সে তাকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে গলা ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে শিশুটি শ্বাসরোধে মারা গেলে নয়ন তাকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে। এরপর তার বোনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বিষয়টি গোপন করতে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কাহিনি সাজাতে থাকে। এরপর নয়ন তার বোনকে নিয়ে মামাবাড়ি যায় এবং শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়।
গ্রেফতার নয়ন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। সে মণিরামপুর উপজেলার মাছনা কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে।
জানতে চাইলে ঝিকরগাছা থানার পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) আবু সাঈদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ১২ জুন তাকে (নয়ন) আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন দুপুরে নিখোঁজ শিশুর লাশ ৮ জুন হাড়িয়া এলাকার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। তার বাবা একজন মুদি ব্যবসায়ী। শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো।