দুই বছর আগে বিএনপির কর্মিসভা পণ্ড এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছয় সাংবাদিকসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে এ মামলার আবেদন করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী গণেশ কুমার দাস বলেন, মামলার আবেদন তদন্তের দায়িত্ব খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ শামীম হাসান বলেন, আদালত আবেদন গ্রহণ করেছেন। তবে কোনও আদেশ দেননি। মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, হত্যাচেষ্টাসহ ১০টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ মে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির উদ্যোগে কর্মিসভা চলছিল। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে হামলা চালান। বল প্রয়োগে সভা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ ও স্প্লিন্টারের আঘাতে বিএনপির ৫০ নেতাকর্মী আহত হন। শেখ হাসিনাকে হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং শেখ সোহেল উদ্দিন, শেখ রুবেল, শেখ বেলাল উদ্দিন বাবু। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক এম ডি বাবুল রানা, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল।
এ ছাড়া খুলনা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার গোপীনাথ কাঞ্জিলাল, খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি হাসান আল মামুনসহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও অনেক নেতাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সভাপতি সাঈয়েদুজ্জামান সম্রাট (উপ-দফতর সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগ), সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু (সহসভাপতি, নগর আওয়ামী লীগ), মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ (দফতর সম্পাদক, নগর আওয়ামী লীগ), সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহেব আলী ও আসাদুজ্জামান খান রিয়াজ (দফতর সম্পাদক, জেলা যুবলীগ) এবং সাংবাদিক সুনীল দাশ রয়েছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়।