X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় বন্যায় মোট ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
২৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:১০আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:৩৪

নেত্রকোনায় বন্যায় মোট ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের মোট ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটির টাকার বেশি বলে  প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। জেলা কৃষি কর্মকর্তা ও মৎস কর্মকর্তার দেওয়া হিসাব থেকে এ তথ্য জানা যায়।  

জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিলাশ চন্দ্র পাল জানান, বন্যার পানিতে এ পর্যন্ত ৭৩,০৭০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এই ফসল থেকে ৪, ২১, ৯৮০ মেট্রিক টন ধান এবং ধান থেকে ২, ৮১, ৩২০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৯৫৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে জেলা মৎস কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন আহম্মদ জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলার খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, মদন ও বারহাট্টা উপজেলায় সরকারি হিসেব মতে মৎস্য খাতে ক্ষয়ক্ষতি ধরা হয়েছে আনুমানিক ২৪ কোটি টাকা। এছাড়া পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় মাছে মড়ক দেখা দিয়েছে। জেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর, গণেশের হাওর, তলার হাওর, জালিয়ার হাওর, চৌতারা হাওরসহ ছোট-বড় ৪২টি হাওরে মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে। এছাড়া নষ্ট হয়ে গেছে ১ হাজার ১ শ’ ৮০.৮৫ মেট্রিক টন মাছ। এ কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন ১৬ হাজার ৫ শ’ ২৮ জন জেলে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জানান, বন্যার পানি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবার তারা আগাম ব্রি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হলো না।

ক্ষতিগ্রস্তরা দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘পানি আসার আগে হাওর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। ‌এছাড়া এসব হাওরের অনেক বাঁধেরই নির্মাণ কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি)। যে কারণে পানি এসে সরাসরি হাওরে ঢুকে আমাদের সব স্বপ্ন তলিয়ে গেছে।’

এ অভিযোগ অস্বীকার করে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, 'বাঁধে অধিকাংশ কাজই হয়ে গিয়েছিল। এরমধ্যে হাওরের ঠিকাদারদের ৬০-৬৫ ভাগ কাজের বিলও দেওয়া হয়ে গেছে।'

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টির কারণে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর অধিকাংশ বোরো ফসল তলিয়ে গেছে এছাড়া গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টির কারণে বারহাট্টা, আটপাড়া, কেন্দুয়া, কলমাকান্দাসহ আরও কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ জেলার কয়েক লাখ মানুষ। এরইমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণ দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান জানান, ৩৬৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫শ’ টাকা করে দেওয়া হবে। এছাড়া জেলায় ৩৬ জন ডিলাকে নিয়োগ দিয়ে ওএমএস এর মাধ্যমে প্রতিদিন ১ টন চাল ও ১ টন আটা ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া আগামী মৌসুমের শুরুতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কৃষকদের ব্যাংক ঋণ আগামী এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এনজিও ঋণ ও বিদ্যুৎ বিল এক বছরের জন্য স্থগিত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: গত মৌসুমে তুলেছি আধাপাকা ধান, এবার নিঃস্ব

 

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৯
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৯
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
তিন মাঠে সাকিব, মোসাদ্দেক, জাকিরের তাণ্ডব
তিন মাঠে সাকিব, মোসাদ্দেক, জাকিরের তাণ্ডব
খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ