বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. জাকিবুল হাসান রনিকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর কাজী মনিরুজ্জামান সোমেল নামের এক ব্যক্তি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানায় একটি অভিযোগ করলে ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ও ২৫ ডি ধারা মোতাবেক পুলিশ মামলাটি রুজু করে। মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জাকিবুল হাসান রনি সেই মামলার ২৯ নম্বর আসামি।
একই মামলায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রিয়েলকে (রিয়েল সরকার) ১০ নম্বর এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবকে ৩০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথিতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ত্রিশাল থানাধীন নজরুল একাডেমি গেট এলাকায় ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ভারী অস্ত্র হাতে হামলা করে এবং বৃষ্টির মতো গুলি করতে থাকে। গুলিতে অনেক ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়। যার মধ্যে অনেকেই দৃষ্টিহীন ও বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছেন।
মামলার পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন আসামি জাকিবুল হাসান রনি। মামলার বিষয়ে ফোনে জানতে চাইলে জাকিবুল হাসান রনি মামলাটি মিথ্যা দাবি করেন। এ সময় বাংলা ট্রিবিউনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদককে সংবাদ না করার বিনিময়ে আর্থিক সুবিধার প্রস্তাব দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্যসহ অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নিয়েছেন, নিজের স্ত্রীকেও কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে বাধ্য করেছেন। নিজের ভাগনেকে বানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি করেছেন মামা-ভাগনে সিন্ডিকেট। বিশ্ববিদ্যালয়ের যত দুর্নীতি-অনিয়ম সংঘটিত হতো সব এই সিন্ডিকেট দ্বারাই নিয়ন্ত্রণ করতো। স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি থাকতেন।