X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ কাঁটাখালী গণহত্যা দিবস

শেরপুর প্রতিনিধি
০৬ জুলাই ২০১৬, ১৭:০৫আপডেট : ০৬ জুলাই ২০১৬, ১৭:১১

আজ কাঁটাখালী গণহত্যা দিবস আজ ৬ জুলাই, বুধবার কাঁটাখালী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর মধ্য সীমান্তবর্তী রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামে ঘটেছিল এক নৃসংশ হত্যাযজ্ঞ কাণ্ড। এ যুদ্ধে শহীদ হন কোম্পানি কমান্ডার নাজমুল আহসান, আলী হোসেন ও মোফাজ্জল হোসেনসহ নাম না জানা আরও অনেক মুক্তিকামী জনতা।
এদিকে স্বাধীনতার ৪ দশক পেরিয়ে গেলেও তালিকায় নাম নেই শহীদদের, নেই কোনও স্মৃতিস্তম্ভ। কালের স্বাক্ষী হয়ে পড়ে আছে ঐতিহাসিক কাঁটাখালী ব্রিজটি।
৭১ এর জুলাই মাসের ৪ তারিখ শনিবার ভোরে কোম্পানি কমান্ডার নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে ৫৩ জনের এক মুক্তিযোদ্ধা দল অবস্থান নেন মালিঝি ইউনিয়নের রাঙামাটি গ্রামের আতর আলীর বাড়িতে। পরিকল্পনা মতে ৫ জুলাই রাতে সফলতার সঙ্গে অপারেশন শেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে আশ্রয় নেন খাটুয়াপাড়ার নঈমদ্দিন ও শুকুর মামুদের বাড়িতে।  
মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে এলাকার রাজাকার-আলবদররা ঝিনাইগাতী আহম্মদ নগরপাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে খবর দেন।
৬ জুলাই সোমবার সকালে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই গ্রামে প্রবেশের একটি মাত্র কাঁচা সড়কের দুদিক থেকে ব্যারিকেড দেয় পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার-আলবদররা। গ্রামবাসীদের অনুরোধে মুক্তিযোদ্ধারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে করতে পিছু হটেন । এসময় পাকিস্তানি হানাদারদের বেপরোয়া গুলিবর্ষণে কোম্পানি কমান্ডার ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের শেষ বর্ষের ছাত্র নাজমুল আহসান, তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও ভাতিজা আলী হোসেন শহীদ হন।

বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেলেও, পাকিস্তানি হানাদের বর্বরোচিত হামলার শিকার হন খাটুয়াপাড়া রাঙামাটি গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের ৬০-৭০ জনকে কোমড়ে দড়ি বেঁধে লাঠিপেটা করতে করতে নিয়ে যাওয়া হয় বর্তমান খাটুয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। আগুন লাগিয়ে দেয় তাদের বাড়িঘরে। ধর্ষণ করা হয় নারীদের। অমানবিক নির্যাতন করে সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় ৬ জন গ্রামবাসীকে। এরা হলেন, আয়াতুল্লা,সামেছ মিস্ত্রি, ফজলু হদি, আব্বাছ আলী, আমেজ উদ্দিন ও বাদশা আলী।

এরপর আরও ২৮ জন গ্রামবাসীকে বেঁধে রাঙামাটিয়ার কালীস্থানের বটগাছের নিচে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হানাদার বাহিনী। সকলের মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে পাকিস্তানি হানাদাররা চলে যায়। সেই ঘটনায় ভাগ্যক্রমে  বেঁচে যায় ২৫ জন গ্রামবাসী। আহতরা এখনও শরীরে গুলি আর বেয়োনেটের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে জীবন পার করছেন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই গ্রামটিতে আজও লাগেনি আধুনিকতার ছোয়া, নেই বিদ্যুৎ বা যাতায়াতের সুব্যবস্থা।

এলাকাবাসীর দাবি, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩ বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি নিরীহ ৬ গ্রামবাসীকে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। সেসঙ্গে ঐতিহাসিক  কাঁটাখালী ব্রিজটিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণ করার।

আরও পড়ুন: শ্যামনগরের তিন গ্রামের মানুষের ঈদ আনন্দ ম্লান 

/এআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার