কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে জেলার ৯ উপজেলার ৬ লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যা কবলিত এলাকার সবগুলো উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন উঁচু প্রতিষ্ঠানে বানভাসী পরিবারগুলো তাদের গবাদি পশু নিয়ে বাস করছে।
আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো জানায়, জরুরিভিত্তিতে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা না হলে বানভাসীদের মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ও সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতের মাঝে ৫৭৫ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হলেও তা ৬ লক্ষাধিক বানভাসীর জন্য অপ্রতুল। বেশির ভাগ বানভাসীর ভাগ্যে ত্রাণ সহায়তা না জোটায় এক বেলা খেয়ে না খেয়ে আছে বলে অভিযোগ করেছেন।
জেলার ৯ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক ও ৪০ কিলোমিটার নদ-নদীর তীর রক্ষা বাঁধ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, রৌমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস এবং বাজারগুলোতেও পানি প্রবেশ করায় থমকে গেছে জনজীবন।
শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় রৌমারী উপজেলাকে দুর্যোগপূর্ণ উপজেলা ঘোষণা করার খবরকে ভুল বোঝাবুঝি উল্লেখ করে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার জানান, গোটা উপজেলায় পানি প্রবেশ করলেও এখনও এমন কোনও ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও জানান, পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আমরা ইতোমধ্যে ৭৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। তার মধ্যে ৭৬ মেট্রিক টন বিতরণ হয়ে গেছে। শুকনো খাবারের পাশাপাশি ত্রাণ কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদীর পানি।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
/এসটি/