X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরগঞ্জের সর্বত্রই আতঙ্ক, এমপির খুনিরা ধরা না পড়ায় ক্ষোভ

জামাল উদ্দিন, ঢাকা ও জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা
১০ জানুয়ারি ২০১৭, ০৪:১৪আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০১৭, ০৪:২৪
image

গাইবান্ধার এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন সুন্দরগঞ্জের সর্বত্রই এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। মন খুলে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যারা কাজ করেন, তাদের ভয় আরও বেশি। দুর্বৃত্তরা যেকোনও সময় যে কারও ওপরই হামলা চালাতে পারে। ৩১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মনজুরুল ইসলাম লিটন খুন হওয়ার পর এখন সবার মুখে মুখে একটি কথাই উচ্চারিত হচ্ছে। তা হলো – যেখানে দিনে-দুপুরে স্লোগান দিয়ে পুলিশ হত্যা করা হলো, বাড়ির বৈঠকখানায় ঢুকে একজন এমপিকে মেরে ফেলা হলো, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? সেইসঙ্গে নয় দিনেও এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট না খোলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।এমপি লিটন হত্যার পর সুন্দরগঞ্জের সাধারণ মানুষ ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ
নেতা ও সমর্থকরা একেবারেই চুপসে গেছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও তারা চারদিক তাকিয়ে তারপর কথা বলেন। যেন আশেপাশেই দাঁড়িয়ে আছে কোনও দুর্বৃত্ত। সন্ত্রস্ত জনপদ সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া যায়।
সুন্দরগঞ্জের রামজীবন ইউনিয়নের বাজারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খালেদ রেজা বাবুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে তারা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সন্ধ্যার আগেই বাড়িতে ফিরে যান। রাতে কাছের কোনও আপনজন গেলেও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পরই দরজা-জানালা খুলেন। দিনের বেলায়ও একা কোথাও যেতে ভয় পান। বিশেষ করে এমপি লিটনের মৃত্যুর পর তারা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। প্রকাশ্যেই জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা মোটরসাইকেলে বাড়ির সামনে মহড়া দেয় বলেও জানান তিনি।
সুন্দরগঞ্জের গোপালচরণ গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইউনুছ আলী সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এমপি লিটনের মৃত্যুতে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা চরম আতঙ্কে আছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকায় এখনও তারা কথা বলতে পারছেন। কয়েক মাস গেলে জামায়াত নেতাদের কদমবুচি করে এলাকায় চলতে হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুন্দরগঞ্জ থানা এলাকার একটি পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সুন্দরগঞ্জের তদন্তকেন্দ্রের নিরস্ত্র চার পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এখনও অনেক পুলিশ সদস্যের মধ্যেই আতঙ্ক রয়েছে। তবে এমন ঘটনা মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যরাও এখন আগের চেয়ে অনেক সক্ষম ও সতর্ক রয়েছে।’

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মৃত্যুকে সঙ্গী করে সুন্দরগঞ্জে রাজনীতি করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়তই মৃত্যু আতঙ্কে থাকি। একজন এমপি, চারজন পুলিশ সদস্য, একজন ছাত্র নেতা ও কয়েকজন সাধারণ সমর্থককে যেভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করা হলো, সেখানে আমরা তো কিছুই না। এতো স্পর্ধা ও হিম্মত সুন্দরগঞ্জে কার আছে, আপনারা সবাই জানেন। এগুলো খতিয়ে দেখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সুন্দরগঞ্জের ওসির কাছে জানতে চেয়েছি, ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যার এজাহারভুক্ত প্রথমসারির আসামীদের এখনও গ্রেফতার করা হলো না কেনো?’

গোলাম মোস্তফা জানান, এমপি লিটনকে হত্যাকাণ্ডের নয়দিন পার হওয়ার পরও তদন্তের কোনও অগ্রগতি তাদের কিংবা স্বজন এমনকি গণমাধ্যমকেও জানানো হচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, ‘কেবল স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আহসান হাবিব মাসুদ নয়, দলের যাকেই সন্দেহ হয় পুলিশ আটক করুক। তারপরও এমপি লিটনের খুনিদের দ্রুত ধরা হোক।’

গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) রবিউল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এমপি লিটন হত্যাকাণ্ড তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসেবে ৪০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৮ জনকে। আর ক’দিন অপেক্ষা করেন, এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের সবই জানানো হবে গণমাধ্যমকে।’

/জেডআরপি/জেইউ/এসএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
কোরবানির জন্য পশু আমদানির পরিকল্পনা নেই সরকারের
দুই রঙে ভিভোর নতুন স্মার্টফোন
দুই রঙে ভিভোর নতুন স্মার্টফোন
জিম্বাবুয়ের সিরিজের জন্য বাংলাদেশের তিন ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা
জিম্বাবুয়ের সিরিজের জন্য বাংলাদেশের তিন ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা
পটুয়াখালীর খালে ভাসছে ‘টর্পেডো’সদৃশ বস্তু, স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক 
পটুয়াখালীর খালে ভাসছে ‘টর্পেডো’সদৃশ বস্তু, স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক 
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে