X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে ৩ লাখ পরিবারের ১০৫ কোটি টাকার ক্ষতি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
২৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৫৫আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:০৮

সুনামগঞ্জে ৩ লাখ পরিবারের ১০৫ কোটি টাকার ক্ষতি

সুনামগঞ্জের হাওর এলাকা জুড়ে এখন শুধু হতাশাগ্রস্ত মানুষের মুখ। অথচ কিছুদিন আগেও যারা নবান্নের ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর ছিল, তাদের সেই স্বপ্ন বানের জলে ভেসে গেছে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন মতে শুধু গোবাদিপশু, গো খাদ্যসহ পোল্ট্রি খাদ্য ও ডিম উৎপাদন হ্রাসের ফলে ১০৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘জেলার ১১টি উপজেলায় ফসলহানির ঘটনায় ক্ষতি হয়েছে ৭৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার গো খাদ্য এবং পোল্ট্রিফিডের দানাদার খাদ্যসহ ডিম উৎপাদন হ্রাসের ফলে ১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে গো খাদ্য সংকটে কারণে স্বল্প মূল্যে গবাদিপশু বিক্রির ফলে আরও ১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা তৈরি শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।’

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের ৮৮টি ইউনিয়নে ফসল হানির ঘটনায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ১১৭টি পরিবার, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৯ হাজার ৫০০ পরিবার। এছাড়া লোকসংখ্যা হিসেবে ধরলে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৫ জন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ জন আংশিক ক্ষতিগ্রত হয়েছে।৭ হাজার ২৯৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ৮২ হাজার ৯৮৯টি বাড়ি আংশিক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে  অতি বৃষ্টি, বাঁধ ভাঙা ও পাহাড়ি ঢলে ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমির কাঁচা ধান তলিয়ে গেছে। এতে ৩ লাখ কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মাছের মড়কে ৫০ মেট্রিক টন দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ মারা গেছে উল্লেখ করে সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘কারণ মাছে মড়ক দেখা দেওয়ায় হাওরে মাছর ধরার ওপর এক সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মাছের মড়কের কারণ অনুসন্ধান করতে আনবিক শক্তি কমিশন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সর্বশেষ পরিবেশ অধিদফতরের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদল হাওরের মাটি, পানি, মাছ পরীক্ষা করেছেন। তাদের অনেকেই বলেছেন পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় এবং পিএইচ বেড়ে যাওয়ায় মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের তালিকা তৈরি করে তাদের সহযোগিতার করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

হাওর এলাকার মানুষের যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পারিচালিত হয় বোরো ধানকে ঘিরে। কারণ বছরের আট মাসই হাওর এলাকা পানিতে থৈ থৈ করে। ওই সময় কিছু লোক মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এবার তাদের সে অবস্থাও নেই। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কৃষকদের কাঁচা ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ওই এলাকার মানুষের এ পরিণতি। ফসলহানির ঘটনার পর ৯ এপ্রিল থেকে হাওর এলাকার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খোলাবাজারে চাল ও আটা বিক্রি শুরু করে সরকার। প্রতিটি উপজেলা সদরে তিনজন ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে প্রতিকেজি চাল ১৫ টাকা দরে ও প্রতি কেজি আটা ১৭ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। কিন্তু তা ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

/জেবি/  

আরও পাড়তে পারেন: ধান নিয়েছে ঢলের পানি, মাছ নিয়েছে বিষাক্ত পানি এখন খাব কী?


 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
টিভিতে আজকের খেলা (২ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২ মে, ২০২৪)
ঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!
সিয়াম-পরীর গানের ভিউ ১০০ মিলিয়ন!