খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গজেন্দ্রপুর গ্রামের আধাপাকা সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিছানো ইটের (ইট সোলিং) নিচে পর্যাপ্ত বালিও দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর দফতর সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪২ টাকা ব্যয়ে ১২শ’ মিটারের কাঁচা সড়কটিকে ইট বিছিয়ে আধাপাকা করার কথা। কাজটি পেয়েছে খুলনার টুটপাড়া এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স। গজেন্দ্রপুর মাদ্রাসা মোড় থেকে খান বাড়ী-হাজিবুনিয়া পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কটির প্রায় আটশ’ মিটারের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) ল্যাবরেটরি থেকে নির্মাণসামগ্রীর গুণাগুণ পরীক্ষা ছাড়াই অত্যন্ত নিম্নমানের ইট দিয়েই সে কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দপ্তরের।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ‘নিম্নমানের ইট অপসারণ করে সিডিউলে বর্ণিত এক নম্বর ইট ব্যবহারের জন্য ঠিকাদারকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও নির্দেশই মানছেন না।’
গ্রামবাসীর দাবি, সিডিউল অনুযায়ী মূল সড়কের দু’পাশে তিন ফুট করে অতিরিক্ত জায়গা রাখার কথা। সে নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। নির্মাণাধীন সড়কের পাশ থেকে মাটি তুলেই কাজ করা হচ্ছে। ফলে এখনই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধস নেমেছে। বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও প্রতিকার না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন ঠিকাদার।
স্থানীয় ফারুক মোল্লা বলেন, ‘সড়কে একটি ড্রেন-কালভার্ট নির্মাণের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি।’
নির্মাণ কাজের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে সাহস ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উসমান খান জানান, অনিয়মের প্রতিবাদ করায় একবার কাজ বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে ঠিকাদার আবারও কাজ শুরু করেছে। ফের প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে ঠিকাদারের লোকজন।
অভিযোগের ব্যাপারে ঠিকাদার জিয়াউল আহসান টিটো বলেন, ‘একশ’ ইটের মধ্যে ১০-২০টি দুই নম্বর ইট থাকবেই।’ কাজ করতে বেশি ঝামেলা হলে ইট তুলে নিয়ে চলে যাবেন, এমনকি প্রয়োজনে ওই কাজই করবেন না বলেও জানান তিনি।
ঠিকাদারের দাবি, ‘কেবি’ ইট সরবরাহকারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর বুলুকে নিয়ে গত সপ্তাহে বৈঠক হয়েছে। আগের ব্যবহৃত ‘জেএসবি’ ইটের পরিবর্তে বাকি কাজের জন্য বুলু’র মালিকানাধীন ভাটা থেকে ‘কেবি’ ইট নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
/এএইচ/এমএ/