হবিগঞ্জের বাহুবলে চাঞ্চল্যকর চার শিশু হত্যাকাণ্ডের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের জরিমানাও করা হয়েছে। এ মামলায় আরও দুজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান।
মৃত্যুপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, রুবেল মিয়া,আরজু মিয়া ও উস্তার মিয়া (পলাতক)। তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন, জুয়েল মিয়া ও সাহেদ মিয়া। তাদেরকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্ত তিনজন হলেন, আব্দুল আলী ওরফে বাগাল, বিল্লার মিয়া (পলাতক) ও বাবুল মিয়া (পলাতক)।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুানালের পিপি কিশোর কুমার কর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে সরকারি পক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, রায় ঘোষণার নথিপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় হবিগঞ্জের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ইছাবিল এলাকা থেকে বালিচাপা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই চার শিশু হলো সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আবদুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)। এ ঘটনায় বাহুবল থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন আবদাল মিয়া।
একই বছরের ২৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি মোক্তাদির হোসেন নয় জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দুই পঞ্চায়েত আবদাল মিয়া তালুকদার ও আব্দুল আলী বাগালের মধ্যে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড বলে মামলার তদন্ত ও আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে।
এ মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা হলো পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল, তার দুই ছেলে রুবেল মিয়া ও জুয়েল মিয়া, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আরজু মিয়া ও শাহেদ মিয়া। আসামিদের মধ্যে বাচ্চু মিয়া নামের একজন র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এ মামলার পলাতক আসামি উস্তার মিয়া, বাবুল মিয়া ও বিল্লাল পলাতক। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
/এআর/এসটি/
