নব্য জেএমবির ‘সরওয়ার জাহান-তামিম চৌধুরি’ গ্রুপের আইটি সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিবকে (২৬)মঙ্গলবার (২৯-আগষ্ট)গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।
রাকিব দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির হামলার সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের দাবি। গ্রেফতাকৃত রাকিবুল ইসলাম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙা এলাকার কোরবান আলীর ছেলে। তিনি এই উপজেলার ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদরাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ নব্য জেএমবির ‘সরওয়ার জাহান-তামিম চৌধুরি’ গ্রুপের ৩১৩ বদরি সৈনিকের আইটি সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিবকে গ্রেফতার করেছে। পরে ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদীমূলক ১৩টি ফেসবুক আইডি পরিচালনার কথা স্বীকার করেছে। এরমধ্যে ৩১৩ বদরি সৈনিক, নাঙা তরবারি, ফিদাই হামলা ও খেলাফতের সৈনিক অন্যতম।’
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনএম নাসিরুদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার লিজা বেগম, লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাসসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘২০০৯ সালে রাকিব ইসলামী ছাত্র শিবিরে যোগ দিয়ে সাথী পর্যন্ত যায়। এরপর ২০১৪ সালে নব্য জেএমবির সরওয়ার-তামিম গ্রুপের যোগদান করেন। তিনি স্থানীয় বিভিন্ন দুর্গম চরের জঙ্গি আস্তানায় অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে রাকিবুল ঢাকার টঙ্গিতে জেএমবির মাইনুল ইসলাম ওরফে বরিশাল ভাইয়ের গোপন বৈঠক থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ (ডিবি) ২৯ আগস্ট তাকে হাতীবান্ধার টংভাঙা এলাকার নিজবাড়ি থেকে ২২টি জিহাদি বই ও একটি অ্যান্ড্রয়েট মোবাইলফোনসহ গ্রেফতার করেছে।’
হাতীবান্ধা ভবানীপুর ছেফাতিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাকিবুল ইসলাম ২০১৬ সালে ফাজিল প্রথম বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বর্তমানে সে অনিয়মিত ছাত্র হিসেবে আছে। তবে তার বাবা কোরবান আলী (৪৮) এই প্রতিষ্ঠানের সহকারী মৌলভী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। পরে ২০১১ সালে তিনি আরবি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। এমপিও না হওয়ায় ২০১৬ সালে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এখন তিনি কোথায় থাকেন কি করেন তা বলতে পারি না।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ডিবির এসআই) সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার রাকিকুল ইসলামকে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডলের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এসময় তার সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠনোর নির্দেশ দেন।’
আরও পড়তে পারেন: অনুমতি ছাড়াই বগুড়ার নির্যাতিত মা-মেয়েকে নিয়ে আদালতে পুলিশ