আজ ১২ ডিসেম্বর বগুড়ার আদমদীঘি হানাদারমুক্ত দিবস। দীর্ঘ ৯ মাস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়ে যাওয়ায় বিজয়ের ৪ দিন আগে আদমদীঘি শত্রুমুক্ত হয়।
সান্তাহার জংশন ছিল হানাদারদের শক্তি ঘাঁটি। এখান থেকে তারা গোটা উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতো। শুধু পাকিস্তানি হানাদার নয়, রাজাকার ও অবাঙালি বিহারীরা স্বাধীনতাকামীদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায়। মার্চের শুরু থেকে তারা বিভিন্ন গ্রামে লুট, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। নয় মাস সান্তাহার অস্ত্রধারী বিহারীদের দখলে থাকায় কোনও বাঙালি ঢুকতে পারেনি। তারা বাঙালি দেখামাত্র নির্যাতন ও নির্বিচারে হত্যা করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার কুসুম্বী, আদমদীঘি রেলস্টেশন, নশরতপুর, মথুরাপুর, সান্তাহারসহ বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন। এতে বেশ কিছু হানাদার নিহত হয়।
রক্তদহ বিল, বোদলা, পালসা, গণিপুর এলাকা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ এলাকা। এক পর্যায়ে হানাদাররা আখিড়া গ্রামের কাছ থেকে রাজাকারদের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, আলতাফ হোসেন এবং চাঁপাপুর থেকে আনোয়ারুল হক টুলু ও আবদুস সাত্তারকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তাদের কয়েকদিন থানায় রেখে নির্যাতন ও পরে শ্মশান ঘাটিতে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে হানাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে। তারা ১২ ডিসেম্বর ভোর থেকে আদমদীঘি সদর থেকে পালাতে শুরু করে। পালানোর সময় পাইকপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সাত্তার ও কায়েতপাড়ায় একরামকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে জখম করে হানাদার বাহিনীরা। ১২ ডিসেম্বর আদমদীঘি সদরে বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়।