বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় চলন্ত অটোরিকশায় এক নারীকে মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই নারী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার বিহিগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত জুলেখা খাতুন (৪০) উপজেলার গোহাইল গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী-সন্তানসহ বগুড়া শহরের কৈগাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সময় ছেলে জাকির হোসেন (২০) জুলেখার সঙ্গে একই অটোরিকশায় ছিলেন। তবে তিনি সুস্থ আছেন।
তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাটি নিয়ে তাদের সন্দেহ আছে। কারণ ওই নারীর ছেলের ভাষ্যের সঙ্গে ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আশপাশের কেউ গুলি ছোড়ার শব্দ শোনেনি। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে চায়নি পুলিশ।
জুলেখার ছেলে জাকির হোসেন জানিয়েছেন, তারা গোহাইল থেকে অটোরিকশাযোগে শহরের কৈগাড়ি এলাকার বাসায় ফিরছিলেন। অটোরিকশায় চালকসহ তিন জন ছিলেন। দুপুর ১টার দিকে বিহিগ্রাম এলাকায় পৌঁছেন। রাস্তা ফাঁকা ছিল। বিপরীতমুখী চারটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক অটোরিকশাটিকে অতিক্রমের সময়ে গুলি ছোড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মায়ের ঠোঁট রক্তাক্ত হয়। দুটি দাঁত ভেঙে যায়। পরে মাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কারা গুলি ছুড়েছিল, কাউকে চিনতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে জাকির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হামলার লক্ষ্যবস্তু আমরা ছিলাম কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারিনি। হয়তো তাদের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মায়ের ঠোঁটে লেগেছে। দুর্বৃত্তদের মাথায় হেলমেট থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ ঘটনার ভাষ্যের সঙ্গে বাস্তবের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ভুক্তভোগীর ছেলের ভাষ্য অনুসারে অটোরিকশা একপাশে ও মোটরসাইকেলগুলো অন্য পাশে ছিল। আঘাতটি গুলির কিনা, তা চিকিৎসকও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। চিকিৎসক আমাদের বলেছেন, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষার পর নিশ্চিত করবেন। তবে ওই নারীর মুখের বাঁ পাশে ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন আছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবো না।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৪ মে শাজাহানপুর উপজেলার বিহিগ্রাম কৃষি কলেজের সামনে দুর্বৃত্তরা চলন্ত অটোরিকশার গতিরোধ করে গুলি চালালে মোজাফফর হোসেন ওরফে বাবা হুজুর (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। তিনি ঝাড়ফুঁক ও পানি পড়া দিতেন। শহরের নিশিন্দারা মধ্যপাড়া এলাকায় দারুল হেদায়া কওমি মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে শহরের কারবালা এলাকায় বসবাস করতেন। ওই দিন
বাবা হুজুর নাটোরের সিংড়ার বাড়ি থেকে অটোরিকশায় শহরে ফিরছিলেন। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা করতে পারেনি। এ অবস্থায় আজ এক গৃহবধূ ‘গুলিবিদ্ধ’ হওয়ার অভিযোগ তোলায় আবারও স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।