X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

এখনও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

জিয়াউল হক, রাঙামাটি
১৩ জুন ২০১৯, ১১:৪৩আপডেট : ১৩ জুন ২০১৯, ১৭:২৫

পাহাড়ের পাদদেশে ঘর তৈরি করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস (ফাইল ছবি) সামনে বর্ষা মৌসুম। দুই বছর আগে এই দিনে (১৩ জুন) প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে রাঙামাটিতে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এতে দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। ব্যাপক ক্ষতি হয় পুরো জেলায়। তিন মাস আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। পরের বছর একই সময়ে রাঙামাটির নানিয়ারচরে প্রবল বর্ষণে মৃত্যু হয় ১১ জনের। বারবার এতো হতাহতের পরও থেমে নেই পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শহরের ৩১টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় তিন হাজার ৩৭৮ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোক পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও তাদের সরানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাণহানি এড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
পাহাড়ের পাদদেশে বসতি (ফাইল ছবি) রাঙামাটিতে স্মরণকালের পাহাড় ধসের ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির পরও বর্ষা শেষে ফের একই স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি। রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী, যুব উন্নয়ন এলাকা, মনতলা আদাম, সাপছড়ি, পোস্ট অফিস এলাকা, মুসলিমপাড়া, নতুনপাড়া, শিমুলতলী, মোনঘর, সনাতনপাড়ায় গত বছর সবচেয়ে বেশি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এরপরও সেসব এলাকায় বসত স্থাপন থেমে থাকেনি।

‘কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। মরলে এখানেই মরবো’
মুসলিমপাড়া এলাকার ইসমাইল ও রমিজা বেগম পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত একই জায়গায় আবার নতুন বসতি গড়ে তুলে সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তারা জানান, অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই মৃত্যুর শঙ্কা আছে জেনেও নিজেদের ভিটামাটি ছাড়বেন না তারা। যদি সরকার তাদের নিরাপদ জায়গার ব্যবস্থা করে দেয়, সেক্ষেত্রে চলে যাবেন।
ওই পরিবারের একজন বলেন, ‘সরকার আমাদের জায়গা ছাড়তে বলে, কিন্তু আমরা কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো, সেই বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই আমরা কোথাও যাবো না। বাঁচলে এখানেই বাঁচবো, মরলে এখানেই মরবো।’ যুব উন্নয়ন ও মনতলা আদাম এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র লাল চাকমা ও সোনা চন্দ্র চাকমা জানান, বর্ষা মৌসুমে জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চিহ্ন দিয়ে চলে যায়। পাহাড়কে ঝুঁকিমুক্ত করে বসবাসের উপযোগী করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সড়কে ফাটল (ফাইল ছবি) ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ হচ্ছে
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, ‘পাহাড়ধস মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অতিমাত্রায় বৃষ্টির ফলে পাহাড়ধস হলেও যাতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক। শহরের ৩১টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: মরণ ফাঁদে নতুন বসতি

                রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০

               এখনও পাহাড়ে ১৭ হাজার মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

               ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা, বন্ধ রাঙামাটির প্রধান সড়ক

             রাঙামাটিতে টিলা সমান করে আশ্রয়হীনদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের সুপারিশ              

 

/ওআর/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, এখনও শঙ্কায় পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, এখনও শঙ্কায় পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা
দীর্ঘদিন পর খাল উন্মুক্ত, ২০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ উৎফুল্ল
দীর্ঘদিন পর খাল উন্মুক্ত, ২০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ উৎফুল্ল
গাজাবাসীর নিরাপত্তাই ট্রাম্পের প্রধান চাওয়া
গাজাবাসীর নিরাপত্তাই ট্রাম্পের প্রধান চাওয়া
পাবনায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
পাবনায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল