ঘুষ নেওয়ার ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পরও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার ঘোষসহ দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীরা এখনও বহাল তবিয়তেই আছেন। এখনও পর্যন্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানেন না। এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার নিজে তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।
জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ভিডিও ও লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যে তদন্ত শুরু করি সেটি নিজস্ব, বিভাগীয় নয়। ঊর্ধ্বতন সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিষয়টি অবগত কিনা আমি জানি না। ঊর্ধ্বতনদের কেউই এ বিষয়ে জানতে চাননি।’
এরই মধ্যে সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে তার কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলন করেছেন। যদিও সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের সংবাদ সন্মেলনের আগে ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু অনুমতি না নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করেন তিনি।
এদিকে, সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলিল লেখকদের শেড নির্মাণের সময় বিধি বহির্ভুতভাবে সরকারি দু’টি মেহগনি গাছ কেটে ফেলেছেন তিনি। একটি গাছ বিক্রি করা হলেও অন্যটি দিয়ে নিজের জন্য ফার্নিচার তৈরি করেছেন সুব্রত। নিজের দফতর বা বনবিভাগের অনুমতি নেওয়া তো দূরের কথা গাছ কাটা বা বিক্রি সম্পর্কিত কমিটি গঠন করা হয়নি। এর আগের কর্মস্থলে এ ধরনের কাজ করায় সুব্রতর বিভাগীয় শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল বলে তার সহকর্মী জানিয়েছেন।
সংবাদ সন্মেলন ও সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে সুব্রত বলেন, ‘আমারসব ধরনের অনুমতি আছে।’ এর আগে আপনি কেন সাসপেন্ড হয়েছিলেন— এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি দ্রুত মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।
এসব বিষয়ে জানতে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রার (আইজিআর) খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত: শাহজাদপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারসহ তার কার্যালয়ের কিছু কর্মচারীর ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও গত ১৫ আগস্ট ফেসবুকে পোস্ট করেন সোহেল রানা নামের এক ব্যাক্তি। প্রথমে জানা যায় তিনি শাহজাদপুর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। সোহেল রানা সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার নামে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ ৯টি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত শুরু (ভিডিও)