X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

গাজীপুর প্রতিনিধি
২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০১:৪৮আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০১:৫০

গাজীপুর আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও জাতীয় পার্টির নব গঠিত কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নূরুল ইসলাম দিপু ও তার ভাই একই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূরুল ইসলাম শিপুর (বর্তমানে কারাগারে) বাড়িতে অগ্নিংসযোগ করা হয়েছে।


শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় টঙ্গীর গোপালপুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয। এ সময় বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। বাড়িটিতে তাদের স্বজন ও ভাড়াটিয়ারা বাস করেন।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আতিকুর রহমান জানান, আগুনে বাড়ির দোতলার একটি ইউনিট পুড়ে গেছে এবং নিচ তলাসহ অন্যান্য ইউনিট ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় অন্যান্য ইউনিটে ছড়াতে পারেনি।
উল্লেখ্য, আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি দিপুকে জাতীয় পার্টির (জাপার) যুগ্ম সম্পাদক করায় টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করে আসছিল। দিপু বর্তমানে ইউরোপে পলাতক রয়েছেন। এর আগে তিনি জাতীয় পার্টির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০৪ সালে আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডের সময় দিপু জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে আপিলে রয়েছে।
দিপুর স্ত্রী শরিফা খানম সুমি বলেন, আছরের নামাজের পর মিছিলসহ হঠাৎ ৪-৫শ’ লোক বাড়িতে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। বাড়িতে ঢুকে কিছু বোঝার আগেই ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। বাধা দিলে হামলাকারীরা বলতে থাকে-মাস্টারের খুনির কোনও আত্মীয়-স্বজন টঙ্গীতে থাকতে পারবে না। তাদের দেওয়া আগুনে বাড়ির তিনটি কক্ষ আগুনে পুড়ে গেছে। অন্তত ২০টি কক্ষের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। পরে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ি ও পুলিশ এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
গাজীপুরের জনপ্রিয় নেতা সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার ২০০৪ সালে ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। এ সময় গুলিতে ওমর ফারুক রতন নামের আরও একজন কিশোর নিহত হন। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই মতিউর রহমান বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ এবং আসামিপক্ষে দুজন সাক্ষ্য দেন।
এ মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন এবং দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েক আসামি তাদের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে সর্বশেষ ২০১৬ সালের জুন মাসে উচ্চ আদালতের রায়ে ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড, আট জনের যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
রায়ে দ্রুত বিচার আদালতে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল এমন ১১ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকার, মাহবুবুর রহমান ও সোহাগ এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী ও নুরুল আমিনসহ ৮ জন বিভিন্ন কারাগারে রয়েছে। নুরুল ইসলাম দীপুসহ বাকি দণ্ডপ্রাপ্তরা ভারত, ইতালি, বেলজিয়াম, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩০ মামলার বিচার শেষের অপেক্ষা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩০ মামলার বিচার শেষের অপেক্ষা
উপজেলা নির্বাচন: ওসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
উপজেলা নির্বাচন: ওসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
মেলায় জাদু খেলার নামে ‘অশ্লীল নৃত্য’, নারীসহ ৫ জন কারাগারে
মেলায় জাদু খেলার নামে ‘অশ্লীল নৃত্য’, নারীসহ ৫ জন কারাগারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা