X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

৬৮ বছরেও নেই ভাষা সৈনিকদের ‘স্মৃতিস্মারক’

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৫৮আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৬

নীলফামারীর ভাষা সৈনিকরা
মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ে ১৯৫২ সালে আন্দোলনে নেমেছিল বাঙালি জাতি। সেই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন নীলফামারীর প্রগতিশীল ছাত্র-যুবক, শিক্ষক ও রাজনৈতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষেরা। তবে আন্দোলনের ৬৮ বছর পরেও তাদের স্মৃতি রক্ষায় জেলায় কোনও স্মারক স্থাপনা নির্মাণ হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, ভাষা আন্দোলনের সময় সারা দেশের মত উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তরের জনপদ নীলফামারী। সে সময় ভাষা সৈনিক আবু নাজেম মো. আলী, খয়রাত হোসেন, দবির উদ্দিন আহমেদ, সামছুল হক ও শফিয়ার রহমানের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক ও জনতা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সংগ্রামে। তাদের অনেকেই আজ আর বেঁচে নেই। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই কেবল এই ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করা হয়। গঁৎবাধা কিছু অনুষ্ঠান পালিত হলেও এরপর আর কোনও আলোচনায় থাকেন না দেশের সূর্য সন্তানরা। ফলে নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে না, ভাষা আন্দোলনে নীলফামারীর ভাষা সৈনিকদের অবদান বিষয়ে।

প্রয়াত ভাষা সৈনিক শফিয়ার রহমানের বড় ছেলে সাজ্জাদুর রহমান রোমান বলেন, ভাষার জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার বাবা জেল খেটেছিলেন। দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘আমার বাবাসহ ভাষা সৈনিকদের স্মৃতি রক্ষায় আজও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’

ভাষা সৈনিক শফিয়ার রহমান তিনি আরও বলেন, ‘ভাষা শহীদদের নামে নীলফামারী শহরের সড়ক বা কোনও স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা যেতো। তবে বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই কেবল তাদের স্মরণ করে দায় সারা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ভাষা সৈনিকদের স্মৃতি রক্ষায় যাতে উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং পরবর্তী প্রজন্ম যেন তাদের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা শহরে ভাষা সৈনিক ও সাবেক মন্ত্রী খয়রাত হোসেনের নামে কেবল থানা পাড়ার একটি সড়ক ও পৌরসভার একটি মার্কেটের নামকরণ হয়েছে। তবে এসব স্থাপনা এখন অন্য নামেই চিনছেন স্থানীয়রা। বাকিদের নামে এখনও কোনও স্থাপনা নির্মাণ বা নামকরণ হয়নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক বলেন, বাংলা ভাষাকে বিশ্বে পরিচিতি দিতে সংগ্রাম করেন ভাষা সৈনিকরা। তাদের স্মরণ করা ও তাদের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। তাদের স্মৃতি রক্ষায় এখনই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

প্রয়াত ভাষা সৈনিক আবু নাজেম মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘ভাষা সৈনিকের সন্তান হিসেবে আমিও চাই তাদের নামে শহরে সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নির্মাণ বা নামকরণ হোক। পরবর্তী প্রজন্ম এসবের মাধ্যমে জানতে পারবে মহান ভাষা আন্দোলনের কথা। পুঁথিগত ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থাকলেও স্থানীয়ভাবে সেটা ধারণ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, ভাষা সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতে ২০১৫ সালে বড় আকারে স্থানীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ভাষা সৈনিক খয়রাত হোসেনের নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। অন্যদের নামেও শহরের বিভিন্ন সড়কের নামকরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। শিগগিরই এসব নামকরণের কাজ শেষ করা হবে।

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক
আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক
হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক গভীর যে কারণে
হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক গভীর যে কারণে
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি