পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। বুধবার (১ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বুড়িগোয়ালিনী রেঞ্জ অফিস চত্বরে সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এমএ হাসান এর উদ্বোধন করেন। ১ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন আড়াই মাসব্যাপী মৌয়ালরা সুন্দরবনে মধু আহরণ করবেন। এ সময়ে গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনী ও হরিনগর এলাকা থেকে আসা পেশাদার মৌয়ালরা উপস্থিত ছিলেন।
এসিএফ এমএ হাসান জানান, সুন্দরবনে অভয়ারণ্য এলাকায় মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে পারবেন না। এ বছর মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ৫০০ কুইন্টাল। প্রতি কুইন্টাল মধু আহরণের জন্য ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোমের জন্য এক হাজার টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি নৌকায় ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ জন মৌয়াল অবস্থান করতে পারবেন। বন বিভাগ থেকে অনুমোদন নিয়ে সুন্দরবনে মৌয়ালরা ১৫ দিন অবস্থান করে জনপ্রতি ৫০ কেজি মধু আহরণ করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত মধু আহরণের জন্য অতিরিক্ত রাজস্ব দিতে হবে মৌয়ালদের। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সুন্দরবনে গাছে গাছে বিশেষ করে খলিসা ফুলে ভরপুর, তাই এ বছর মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মধু আহরণ মৌসুম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে মৌয়ালদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে টহল জোরদার করা হয়েছে। মধু আহরণের সরঞ্জাম ছাড়া সুন্দরবনে অবস্থানের সময়ে মৌয়ালরা অন্য কিছু বহন করতে পারবেন না।
গাবুরা ও হরিনগর এলাকার পেশাদার মৌয়াল আব্দুর রহমান এবং গোলাম রব্বানিসহ অনেকে বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজন ফেলে সুন্দরবনে বাঘ, নদীতে কুমির এবং বনদস্যুদের হামলার কথা মাথায় নিয়ে মধু আহরণের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ করছি।’ তারা বনদস্যুর হাত থেকে নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
কৈখালী উপকূল রক্ষী বাহিনীর (কোস্টগার্ড) চিফ পেটি অফিসার (সিপিও) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মৌয়ালদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের সমন্বয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুন্দরবনে টহল জোরদার করা হয়েছে।’