X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

দেশব্যাপী নিরাপদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সরবরাহের প্রত্যয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
১১ মে ২০২০, ২০:১৯আপডেট : ১১ মে ২০২০, ২০:২৭

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন করোনা পরিস্থিতিতে আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম দেশব্যাপী নিরাপদে সরবরাহ ও বাজারজাত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। রবিবার (১০ মে) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ‘নিরাপদ আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এই প্রত্যয় জানানো হয়। এ সময় ১৪টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া নিরাপদ আম উৎপাদন, আম সংগ্রহ, বাজারজাতরকরণ ও সরবরাহের লক্ষে করণীয় নিয়েও আলোচনা করা হয়।  

জেলা প্রশাসক এজেডএম নূরুল হকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন– চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের  সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল। বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন– অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাজকির-উজ-জামান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আম গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন, জেলা মার্কেটিং অফিসার নূরুল ইসলাম, সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আম চাষি, ব্যবসায়ী, আড়তদার ও আম ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ।

সভায় আম সংশ্লিষ্ট সবাই একমত হওয়ায় এবার চলতি মৌসুমে জেলায় বিভিন্ন জাতের আম পাড়ার বিষয়ে কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে না বলে জানান জেলা প্রশাসক এজেডএম নুরুল হক। পাশাপাশি জেলার উৎপাদিত দেশসেরা নানা জাতের নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম দেশের বিভিন্ন্ প্রান্তে নির্বিঘ্নে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক। এ সময় সময়সীমা নির্ধারণ করে আমপাড়া নিয়ন্ত্রণ করা সঠিক নয় বলেও মত দেন সভায় অংশগ্রহণকারীরা।  অপরিপক্ব আম পেড়ে বাজারজাত করলে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।

তবে আমপাড়ার সময়সীমা নির্ধারণ না করায় এবং করোনা পরিস্থিতিতে জেলার আম সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় খুশি স্থানীয় আম চাষি-বাগান মালিক, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা।

মতবিনিময় সভায় আম সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষে জেলা প্রশাসন এবার নিরাপদ আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণে ১৪টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।  জেলা প্রশাসন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে সেসব সিধান্তের কথা জানায়।

সিধান্তগুলো হলো:

১. আমের দ্রুত বৃদ্ধি বা দ্রুত পাকানোর জন্য হরমোন বা রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না। আম পাড়ার ১৫ দিন আগে কোনও ধরনের রাসায়নিকই ব্যবহার করা যাবে না।

২. বাণিজ্যিক আমবাগানে কোনোভাবেই কৃত্রিম উপায়ে আম বড় করা বা পাকানোর জন্য রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না। এ লক্ষ্যে নিয়মিত মোবাইলকোর্ট/টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হবে।

৩.  কোনো বাণিজ্যিক আমবাগানে রোগবালাই দমনের জন্য কোনো বালাইনাশক ব্যবহার আবশ্যক হলে তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী হতে হবে।

৪.  প্রতিটি বাণিজ্যিক আমবাগানে একটি করে লগবই ব্যবহার করতে হবে। সেখানে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী কোন তারিখে কী কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং পরামর্শপত্র এবং ওষুধ কেনার ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ করতে হবে।

৫.  কোনো আমের আড়তদার বা ব্যবসায়ী তার আড়ত বা গুদামে রাখা আমে রাসায়নিক ব্যবহার করবেন না।

৬. আম পরিবহনের জন্য সরকারি পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রেলগাড়িতে বিশেষায়িত ওয়াগন এবং বেসরকারি পর্যায়ে সড়কপথে বিশেষায়িত কাভার্ড ভ্যান চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

৭.  সড়কপথে আম পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রাকের সামনে গন্তব্য উল্লেখ করে ব্যানার লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে রাস্তায় যাতে কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হয় সেজন্য জেলা/উপজেলা প্রশাসন আম পরিবহনকারী যানবাহনকে প্রত্যয়ন প্রদান করবে।

৮.  কানসাট আম বাজার মনিটরিং করার জন্য মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।

৯.  জেলার সব আমচাষি, আমবাগান ও আম শ্রমিকদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

১০. প্রকৃত আমচাষিরা যাতে ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য কৃষি প্রণোদনা প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে।

১১. দেশের অন্যান্য জেলা থেকে যাতে আম ব্যবসায়ী, ফড়িয়া ও ক্রেতারা যাতে জেলায় নির্বিঘ্নে আসতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

১২. আমের পুষ্টিগুণ তুলে ধরে মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

১৩. আম সংগ্রহের পূর্বে আম শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও করোনা টেস্ট করা হবে।

১৪. জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বালাইনাশক বিক্রির দোকান নিয়মিত তদারকি করা এবং তারা যেন কোনো ক্ষতিকর বা নিষিদ্ধ কেমিক্যাল বিক্রি করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। 

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
১১ বছর পর এভারেস্ট ছুঁলেন আরেক বাংলাদেশি
১১ বছর পর এভারেস্ট ছুঁলেন আরেক বাংলাদেশি
ধানের বাম্পার ফলনেও ‘অখুশি’ কৃষকেরা
ধানের বাম্পার ফলনেও ‘অখুশি’ কৃষকেরা
মেসির ফেরার ম্যাচে কষ্ট করে জিতলো মায়ামি
মেসির ফেরার ম্যাচে কষ্ট করে জিতলো মায়ামি
সালথা উপজেলায় ওয়াদুদের প্রার্থিতা বহাল, নির্বাচনে বাধা নেই
সালথা উপজেলায় ওয়াদুদের প্রার্থিতা বহাল, নির্বাচনে বাধা নেই
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক