বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খনন চলছে। এক্সক্যাভেটর ও কোদাল দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে জমি কমে যাওয়ায় এ উপজেলায় ফসল উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলায় একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন রয়েছে। বর্তমানে এখানে ১৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর আবাদি জমি এবং ৭৮৭ হেক্টর জলাভূমি ও নদী-নদী রয়েছে। পৌর এলাকা ও বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা টাকার জন্য তাদের তিন ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছেন। আবার অনেকে এক্সক্যাভেটর দিয়ে জমি খুঁড়ে পুকুর খনন করছেন। এই মাটিও ইট তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে একদিকে জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে ফসলি জমির পরিমাণ কমছে। এছাড়া উঁচু জমি গর্তে পরিণত হওয়ায় সেচ কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের সাতবেকী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন মণ্ডলের ছেলে আবদুর রউফ মণ্ডল এক্সক্যাভেটর দিয়ে তার বিশাল এলাকার জমিতে পুকুর খনন করছেন। এ প্রসঙ্গে জমির মালিক রউফ মণ্ডল বলেন, 'আমার জমিটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই জমি খনন করে মাছ চাষের জন্য পুকুর করছি।'
গ্রামবাসী আবদুর রহমান, রশিদ ফকির, শামসুল মণ্ডল, আবেদুর রহমান প্রমুখ জানান, আর্থিক লাভের আশায় কতিপয় ব্যক্তি জমিতে স্যালোমেশিন বসিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন। আবার কেউ কেউ জমির উপরিভাগ বা জমি খনন করে মাটি ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে আশপাশের জমি দেবে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে।
সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ বলেন, 'বালু উত্তোলনের ফলে এই উপজেলায় দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এছাড়াও মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। ফলে তিন ফসলি জমি দিন দিন এক ফসলিতে পরিণত হচ্ছে। ওপরের মাটি বিক্রি করায় অনেক আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সেচ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটছে।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুর আলম জানান, আবাদি জমিতে পুকুর খননের ওপর সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। কেউ আবাদি জমিতে পুকুর খনন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।