করোনা সংকটে কুষ্টিয়ায় গাছের চারা বিক্রি কিছুটা কমেছে। বর্ষা মৌসুমে অনেকে শখের বশে আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে ফলের চারা রোপণ করে থাকেন। তবে করোনাকালে চারা বিক্রি গতবারের চেয়ে কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় ৪১টি নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে বিভিন্ন ফুল, ফল ও কাঠ জাতীয় গাছের চারা বিক্রি করা হয়। কুষ্টিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার অনেকে এখান থেকে পাইকারি ও খুচরা গাছের চারা কিনে নিয়ে যান।
চলতি মৌসুমে ফল জাতীয় গাছের চারার মধ্যে আম ১০০ থেকে ২০০ টাকা, কাঠাল ৩০ থেকে ৪০, লিচু ১০০ থেকে ২০০, পেয়ারা ২০ থেকে ৬০, বরই ৬০ থেকে ৮০, মাল্টা ১০০ থেকে ১৫০, কমলা ১০০ থেকে ১৫০, জামরুল ৮০ থেকে ১০০, জামবুরা ৫০ থেকে ৬০, বিভিন্ন জাতের লেবু ২০ থেকে ১০০, মেওয়াফল ৬০ থেকে ১৫০, চেরি ফল ১০০ থেকে ১৫০, মিষ্টি করমচা ১০০ থেকে ১৫০, আমড়া ৫০ থেকে ৬০, ডালিম ৪০ থেকে ৬০, বেদানা ১০০ থেকে ১৫০, কদবেল ২০ থেকে ১৫০, বেল ৩০ থেকে ৫০, সফেদা ১২০ থেকে ১৫০, জলপাই ৩০ থেকে ৬০, আমলকি ২০ থেকে ৩০০, বয়রা ২০ থেকে ৩০ এবং হরতকী বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। মূলত যে চারাগুলো কলম করা হয় সেগুলোর দাম বেশি। বীজ থেকে তৈরি চারার দাম তুলনামূলক কম।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার এসআর গার্ডেন সেন্টারের মালিক টুটুল হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে গাছ মরে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। তাই এই মৌসুমে মানুষ বেশি গাছ রোপণ করেন। তবে এবার করোনার কারণে গত বছরের চেয়ে গাছের চারা বিক্রি কিছুটা কম। মানুষ ঘর থেকে বের না হতে পারায় সীমিত আকারে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর প্রায় দশ লাখ টাকার ফুল, ফল এবং কাঠের চারা বিক্রি হয়েছিল। সেই তুলনায় এবার বিক্রি কম।
টুটুল হোসেন আরও বলেন, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও পাবনা, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার লোকজন আমাদের এখানে চারা কিনতে আসেন।
টুটুল হোসেন জানান, আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে গাছের বীজ কিনে নিয়ে আসি। কাণ্ড সংগ্রহ করি মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রংপুর, বগুড়া ও দিনাজপুর থেকে। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আমের বীজ (আঁটি) ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হাজার এবং কাঁঠালের বীজ আলুর বাজার দর অনুযায়ী কিনে আনি। সেগুলোকে চারা দেওয়ার পর চারার সঙ্গে কলম করা হয়। তারপর চারা বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে।
জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল গণি সান্টু বলেন, বর্ষা মৌসুমে নার্সারিগুলোতে ফল এবং কাঠ জাতীয় গাছের চারা বেশি বিক্রি হয়। এ মৌসুমে জেলার নার্সারিগুলোতে প্রায় ১০ লাখ গাছের চারা বিক্রি হয়। তবে করোনার প্রভাবে এবার চারা বিক্রি অনেক কম। কারণ গাছের চারা এবং বীজ বাইরের জেলা থেকে সংগ্রহ করতে হয়। অন্য জেলা থেকেও পাইকাররা এখানে চারা কিনতে আসেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে পরিবহন না চলায় অনেকে চারা বা বীজ সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে স্থানীয়ভাবেই তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।