বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘করোনায় সরকার লকডাউন করেনি, বলেছে ছুটি। করোনার মধ্যে সরকার অফিস-আদালত খুলে দিয়েছে। সকলে এর নিন্দা জানিয়েছে। সরকার বলছে ২৫ শতাংশ লোক আসলেই হবে। কিন্তু তারা সবাইকে অফিসে আসতে বাধ্য করছে। ২৫ শতাংশ তুলে দিয়ে কয়দিন আগে ঘোষণা দিয়েছে সবাইকে কাজে যোগদান করতে হবে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষকে সচেতন না করে অফিস-আদালত খুলে দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
শুক্রবার (৭ আগস্ট) কুড়িগ্রাম শহরের সরদার পাড়াস্থ নিজ বাসভবন থেকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশের স্বাভাবিক অবস্থা বোঝানোর জন্য করোনা আক্রান্ত হচ্ছে না বলে ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আর তলে তলে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে করোনার সংক্রমন বাড়াতে সহায়তা করছে। অফিস-আদালত খুলে সবাইকে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য, নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য। কোটি কোটি মানুষকে বিনা চিকিৎসার দিকে ঠেলে দিয়ে ভয়ঙ্কর মরণযজ্ঞ তৈরি করছে।’
কোরবানির পশুর চামড়ার দরপতন সরকারের পরিকল্পিত ছকের বাস্তবায়ন উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘কোরবানির চামড়া নিয়ে আমরা আবারও তেলেসমাতি দেখেছি। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি না হওয়ায় আবারও প্রমাণিত হয়েছে এই সরকার গরিব অসহায় এতিমদের পিসে মারছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করছে। এর উদ্দেশ্য হল অন্য কাউকে, অন্য কোনও দেশের চামড়া শিল্পের বিকাশ সাধন। সরকার নিজ দেশের চামড়া শিল্পকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছে।’
সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণে চামড়া শিল্প ধ্বংস হচ্ছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘প্রতি বছর কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে গরিব এতিমদের খরচ জোগানো হতো। এবার তা হয়নি। মানুষ চামড়া বিক্রি করতে না পেরে নদীতে, রাস্তায় বা মাটির নিচে পুঁতে রাখছে। গরিব অসহায়দের বঞ্চিত করা হয়েছে।’
সরকার ট্যানারি মালিকদের কোনো রকম সহযোগিতা করেনি এবং ঋণ না দেওয়ায় ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয় করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সরকারের যে সকল পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল তা গ্রহণ করা হয়নি। বরং কিছু মেগা প্রজেক্টের নামে দুর্নীতির মহোৎসব করছে নিজেদের লোকদের নিয়ে। এতে মানুষ দিন দিন কর্মহীন হচ্ছে। কর্মসংস্থান হচ্ছে না। কোটি কোটি শিক্ষিত বেকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর কারণ এই সরকারের গণবিরোধী নীতি।’
প্রণোদনা দিয়ে চামড়া শিল্প রক্ষা এবং করোনা ও বন্যা মোকাবিলায় সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান বিএনপির অন্যতম এ নেতা।