উজানের পানি কমতে থাকায় সিরাজগঞ্জে বন্যার পানি আবারও কমতে শুরু করেছে। জেলা পয়েন্টে যমুনার পানি এখন বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকলেও পানিবাহিত রোগ ও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানবিদ এসএম হুমায়ুন কবীর জানান, গত পহেলা জুলাই থেকে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করেছে। তখন থেকে জেলার বন্যা উপদ্রুত ৬টি উপজেলায় ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানায় শিশু ও নারীসহ ৭শ’ ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া, চোখের প্রদাহে ৯৬ জন ও চর্মরোগে ১৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। শারীরিক আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন ১১ জন এবং বিভিন্ন রোগে আরও ১৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় পানিতে ডুবে মারা গেছেন ২৭ জন এবং সাপের কামড়ে মারা গেছেন ৮ জন।
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার সময় শিশুরাই সাধারণত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। বিশেষ করে যারা সাঁতার না জানে, তারা খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। এছাড়া, শিশুরা যারা সাঁতার জানে বন্যার পানিতে তাদের দুরন্তপনা বেড়ে যায়। পচা ও বদ্ধ পানিতেও ভেলা নিয়ে খেলাধুলা করায় পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয় তারা। জেলার বন্যা উপদ্রুত উপজেলাগুলোতে শুরু থেকেই ৯৩টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। সাপের কাটার ভ্যাকসিন ‘এন্টিভেনম’ ইতোমধ্যে জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে।’
জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যার সময় শিশুরা পানিতে ছোটাছুটি করায় খোস-পচড়া ও পচারিসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। চলমান বন্যায় জেলার ৬ উপজেলার শিশু ও নারীসহ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনার পানি গত কয়েক দিন থেকে কমতে শুরু করলেও বন্যার পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী আগস্ট মাসে আরেক দফা বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’