যৌতুকের জন্য ব্যাংকার স্বামীর নির্যাতনের শিকার স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী রঞ্জন কুমার বৈদ্যকে আটক করেছে। শনিবার (৮ আগস্ট) ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর সাহা পাড়া এলাকায়। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ কাজল রানী সরকার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রঞ্জন কুমার অগ্রণী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় কর্মরত এবং কাজল রানী শিমুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৭ মার্চ দেবহাটার শশাডাঙ্গা গ্রামের নিতাই বৈদ্যর ছেলে রঞ্জন কুমার বৈদ্যের সঙ্গে ময়মনসিং জেলার পরিতোষ সরকারের মেয়ে কাজল রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ পাঁচ লাখ টাকা, স্বর্ণ ও সাংসারিক জিনিসপত্রসহ আরও চার লাখ টাকার জিনিসপত্র নেয় বর পক্ষ।
কাজল রানীর অভিযোগ, সন্তান জন্মের পরপরই তার শাশুড়ি সবিতা বৈদ্যর পরামর্শে তার কাছে আবার ২৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তার স্বামী। যৌতুকের দাবিতে তাকে শারীরিক নির্যাতনও করতো। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করে বেতন ও সহকর্মীদের কাছ থেকে ধার করে এ পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও তার মন ভরেনি। আরও যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্যাতন করতে থাকে। শুক্রবার দুপুরের দিকে রান্না শেষ করে ঘরে গেলে বিশেষ টাকার প্রয়োজন বলে তার স্বামী আবারও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার তলপেটে লাথি মারে এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি পড়ে যান। তিনি কান্নাকাটি শুরু করলে পাশের ঘর থেকে শাশুড়ি এস তাকে চড়, কিল, লাথি মারে। এক পর্যায়ে তার স্বামী গলায় গামছা পেঁচিয়ে স্বামী ও শাশুড়ি শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে। তাদের সহায়তায় তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। যৌতুক লোভীর স্বামীর বিচার ও শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানান, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং নির্যাতনকারী ব্যাংক কর্মকর্তা রঞ্জন কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।