X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

করতোয়ায় বিলীন হাজারও মানুষের চলার পথ, হুমকিতে জনবসতি

সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, পঞ্চগড়
১২ আগস্ট ২০২০, ২২:০৩আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২০, ২২:০৬

করতোয়ায় বিলীন হাজারও মানুষের চলার পথ, হুমকিতে জনবসতি

পঞ্চগড়ে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে করতোয়া নদীর ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে জেলার বোদা উপজেলার বেংহারি বনগ্রাম ইউনিয়নের ফুলতলা হয়ে শালশিরী হয়ে মানিকপীড় গড়ের ডাঙ্গা সড়ক। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে ঘুরেও ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। গতবছর নামমাত্র জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা কোনও কাজে আসেনি। ভেঙে গেছে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ, গোরস্থান, ফসলি জমিসহ সহস্রাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বোদা উপজেলার বেংহাড়ি বনগ্রাম ইউনিয়নের সোনাচান্দি, সরকারপাড়া, বন্দরমনি, নিচার ঘাট, আরাজি শিকারপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে চলাচলের একমাত্র পুরনো রাস্তা ফুলতলা-শালশিরী-মানিকপীড় গড়ের ডাঙ্গা সড়কটি। পঞ্চগড় থেকে ফুলতলা হয়ে সোনাচান্দি নিচারঘাট রাস্তাটির অধিকাংশই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও হেঁটে যাওয়ার মতো রাস্তা রয়েছে। ভাঙন শুরু হয়েছে আরাজি শিকারপুর সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে। করতোয়ার ভাঙন ওই বিদ্যালয়ের মাঠ পর্যন্ত চলে এসেছে। এছাড়া পূর্বদিকে বন্দরমনি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে চলছে করতোয়ার তাণ্ডব। অনেক ফসলি জমি, কবরস্থান তেজপাতা ও আমের বাগানের অংশ ভেঙে ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন ক্রমাগত গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। দুটি বিদ্যালয়, দুটি মসজিদ, কবরস্থান, ফসলি জমি, বাগানসহ সহস্রাধিক ঘরবাড়ি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।

করতোয়ায় বিলীন হাজারও মানুষের চলার পথ, হুমকিতে জনবসতি

সরকারপাড়া এলাকার স্থানীয়রা জানান, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতেও তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। করতোয়ার ভাঙনের শঙ্কায় এখন দিনরাত কাটছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। ভাঙন তীব্র হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনও নজরদারি নেই।

সরকারপাড়া এলাকার বৃদ্ধ আসর আলী জানান, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় সাইকেল নিয়ে যেতেও ভয় লাগে। প্রতিবছরই নদীটি ভেঙে ভেঙে গ্রামের দিকে আসছে। জনপ্রতিনিধিরা সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ দেওয়ার আশ্বাস দেয় কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। এখানে শক্ত বাঁধ না দেওয়া গেলে আমাদের ঘরবাড়ি, মসজিদ ও বিদ্যালয় সব নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

করতোয়ায় বিলীন হাজারও মানুষের চলার পথ, হুমকিতে জনবসতি

আরাজী শিকারপুর এলাকার রতন আলী জানান, আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জনপ্রতিনিধিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে ঘুরেছি। কিন্তু রাস্তার ভাঙন ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া যায়নি।

নিচারঘাট এলাকার রশিদুল ইসলাম জানান, গত বছর নদীর ভাঙন ঠেকাতে নামমাত্র কিছু জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল। শুনেছি বরাদ্দ ছিল প্রায় ৩০ লাখ টাকা। ওই জিওব্যাগ কোনও কাজেই আসেনি। ওই স্থানগুলোতে ভাঙন আরও বেড়েছে।

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ওই স্থানগুলো চিহ্নিত করে বাঁধের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্প পাস হলেই সেই অনুযায়ী ওই স্থানে বাঁধের কাজ হবে। তারপরও আমরা পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!