X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘দুই চারটা গ্লাস যদি নাই ভাঙলো, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আসার স্মৃতি কী থাকলো’

নীলফামারী প্রতিনিধি
১৪ আগস্ট ২০২০, ১৪:৪৬আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২০, ১৮:৫৫

‘দুই চারটা গ্লাস যদি নাই ভাঙলো, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আসার স্মৃতি কী থাকলো’

১৯৬৯ সালের ২৩ অক্টোবর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ও ১৯৭০-এর নির্বাচনে প্রচারণার অংশ হিসেবে ডোমার উপজেলা মাঠে জনসভা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই সময়ের স্মৃতির ব্যাপারে জেলার ডিমলা ইসলামিয়া কলেজের প্রভাষক করিমুল ইসলাম (৬০) বলেন, '১৯৭০ সালের নির্বাচনে আমার চাচা আব্দুর রউফ নৌকা মার্কার (ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা) প্রার্থী ছিলেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু নিজেই আমার চাচা ও জেলা শহরের অ্যাডভোকেট আফসার আলী আহমেদকে এমএনএ পদে (সদর, সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ) নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেন। ওই নির্বাচনে তারা দুজনই নির্বাচিত হয়েছিলেন।'

সেদিনের জনসভা শেষে আব্দুর রউফের বাড়িতে রাতের খাবার সেরে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন বঙ্গবন্ধু। রাতেই তিনি প্রচারণার কাজে পঞ্চগড় হয়ে পরের দিন বিকালে ঢাকায় চলে যান।

‘দুই চারটা গ্লাস যদি নাই ভাঙলো, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আসার স্মৃতি কী থাকলো’

ওই বাড়ির কেয়ারটেকার ও সেদিনের তরুণ আব্দুল কুদ্দুস (৬৫) বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, 'রউফ ভাইয়ের ভোটের প্রচার করার জন্য একটি জিপগাড়ি দিয়েছেন শেখ মুজিব। আজও সেই গাড়িটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বহন করে। ভাইয়ের কাছে শুনেছি, ওই গাড়ির দাম বাবদ আড়াই হাজার টাকা দিয়ে ছিলেন তিনি।' এসব স্মৃতি ধরে রাখতে বাড়িটি স্থানীয়ভাবে জাদুঘর ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি।

এই সেই জিপ

আব্দুর রউফের ভাগিনা রওশানুল হক খোকা (৬৫) সেদিনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ''সে সময় গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। হ্যাজাক লাইটের আলোয় খাদ্য পরিবেশন করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের গায়ে লেগে আমার হাত ফসকে পানির গ্লাস পড়ে গিয়েছিল। তখন মামা (রউফ) আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, 'এই চোখে দেখো না।' ওই কথা শুনে প্রিয় নেতা (বঙ্গবন্ধু) বলেছিলেন, 'রউফ, তুমি কী বলছো! দুই চারটা গ্লাস যদি নাই বা ভাঙলো, তাহলে বঙ্গবন্ধু আসার স্মৃতি কী থাকলো!'

খোকা আরও বলেন, '১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদাররা সকাল ১১টার দিকে আমাদের বাড়িসহ পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। তাই প্রিয় নেতার বসার চেয়ার, খাওয়ার টেবিল, গ্লাস-প্লেট, মুখ দেখার আয়না, বিছানা-বালিশ কিছুই রক্ষা পায়নি।'

তৎকালীন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যাম চরণ রায়

জেলা সদরের লক্ষীচাপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও তৎকালীন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামচরণ রায় (৭০) বলেন, 'ওই নির্বাচনি প্রচারণায় বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী আমিও ছিলাম। সেদিন ছিল শুক্রবার (২৩ অক্টোবর)। জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল ডোমার উপজেলা পরিষদ মাঠ। বঙ্গবন্ধুকে দেখতে রাস্তার দুধারে নেমেছিল নারী পুরুষের ঢল। এই স্মৃতি এখনও আমার চোখের সামনে ভাসে।'

‘দুই চারটা গ্লাস যদি নাই ভাঙলো, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আসার স্মৃতি কী থাকলো’

তিনি বলেন, 'ডোমারে যাওয়ার পথে নীলফামারী সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ বাজারের পথসভায় হাজার হাজার জনতার সামনে বক্তব্য রাখেন তিনি। পথসভায় আফসার আলী আহমেদকে (নৌকা মার্কায়) ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান। ডোমারের জনসভায়, বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী ছিলেন এম মনসুর আলী, তাজউদ্দীন আহমদ, এএইচএম কামারুজ্জামান ও সৈয়দপুরের ডা. জিকরুল হক, মো. আলিম উদ্দিন, জলঢাকা উপজেলার আমিন বিএসসি, আজাহারুল হকসহ অনেকেই।'

/এএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বিমানবন্দরে বাস, প্রকৌশলী নিহত
থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বিমানবন্দরে বাস, প্রকৌশলী নিহত
ভারত-পাকিস্তান টেস্ট হবে দারুণ: রোহিত
ভারত-পাকিস্তান টেস্ট হবে দারুণ: রোহিত
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ