নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে কুমিল্লার গোমতী নদী দিয়ে দাউদকান্দি থেকে ভারতের সোনামুড়া বন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে সিমেন্টবাহী একটি কার্গো ট্রলার পৌঁছেছে। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানি লিঃ এর একটি ট্রলার তাদের উৎপাদিত ১০ টন সিমেন্ট নিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে সোনামড়া বন্দরে পৌঁছে।
এর আগে কুমিল্লার বিবির বাজার স্থল বন্দর দিয়ে সোনামুড়া যাওয়ার পথে ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস সাংবাদিকদের জানান, গত ২০ মে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে নতুন দুটি নৌপথের চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। এর একটি রাজশাহী থেকে ভারতের দুলিহান এবং অপরটি কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ত্রিপুরার সোনামুড়া। ওই চুক্তি অনুসারে আজ (শনিবার) প্রথম সিমেন্ট এক্সপোর্টের মাধ্যমে ট্রায়াল রান শুরু করা হলো। বাংলাদেশ এবং ভারত দুই দেশের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। আপনারা জানেন, সাধারণত দুই দেশে মধ্যেই ট্রাক যোগে পণ্য আমদানি-রফতানি করা হয়। এই নৌপথ চালুর ফলে দুই দেশের মধ্যকার বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি-রফতানি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
তিনি আরও জানান, নৌপথের নাব্যতা সংকটসহ আরও যে সকল সমস্যা চিহ্নিত হবে সেগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে।
এর পরে কুমিল্লার বিবির বাজার গোমতীর অংশে বিআইডাব্লিউটি’র চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক বেলুন উড়িয়ে পরীক্ষামূলক নৌ চলাচল উদ্বোধন করেন এবং ট্রলারটিকে বিদায় জানান। এ সময় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, কাস্টমস অফিসার সুভাস চন্দ্র মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা সুপার আজিমুল আহসান, তানভীর সালেহীন ইমন, কাস্টমস কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গোমতী নদীতে কার্গো নৌ চলাচলে নানা সমস্যা ও সংকটের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে বিআইডাব্লিউটি’র চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক বেলুন জানান, সমস্যা, সংকট এবং প্রতিকূলতা চিহ্নিত করতে পরীক্ষামূলকভাবে গোমতী নদী দিয়ে নৌ চলাচল শুরু হলো। পরীক্ষামূলকভাবে ১০ টন সিমেন্ট নৌপথে রফতানি করতে গিয়ে গোমতী নদীর অনেক সমস্যা ও সংকট চিহ্নিত করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নদীতে নাব্যতা সংকট এবং ব্রিজের উচ্চতা। নাব্যতা সংকট রোধে ড্রেজিংয়ের বিষয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ড্রেজিংয়ের অনুমোদন পেলে খুব শিগগিরই নাব্যতা বৃদ্ধি করে যেন আরও বেশি মালামাল বহন করা যায় তার একটি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, কুমিল্লার গোমতী নদী দিয়ে নৌপথের বিষয়ে ভারত সরকার খুব বেশি আগ্রহী। কারণ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য এই বিবির বাজার স্থলবন্দরের সঙ্গে যদি নৌপথটি চালু করা যায় তাহলে সীমান্ত বাণিজ্য আরও সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।