নেত্রকোনার গুমাই নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় নারী ও শিশুসহ মারা যাওয়া ১০ জনের সবাই সুনামগঞ্জের মধ্যনগরের ইনাতনগর গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালের মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর পেয়ে মৃতদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। এখন পর্যন্ত দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকালে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার ট্রলারঘাট থেকে ২৫/৩০ জন যাত্রী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা এলাকায় যাচ্ছিল। এ সময় দুটি বাল্কহেড নৌকা বালি আনতে একই এলাকায় যাওয়ার পথে ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে যাত্রীবাহী ট্রলারটি নদীতে তলিয়ে যায়। এ সময় অন্য যাত্রীরা সাঁতারে তীরে উঠতে পারলেও ইনাতনগর গ্রামের ১০ জন পানিতে তলিয়ে যায়।
ইতোমধ্যে মো. রাকিবুল হাছান (২), পিতা- মৃত আ. ওয়াহাব; লুৎফুর নাহার (২৫), স্বামী- আ. ওয়াহাব; হামিদা (৫০), স্বামী- আবু চান; সুলতানা বেগম (৪০), স্বামী- আ. করিম; মোজাহিদুল ইসলাম (৩), পিতা- জুবায়েল; লাকী আক্তার (৩০), স্বামী- হাবিবুর রহমান; টুম্পা (৪), পিতা- হাবিব; জাহিদ মিয়া (২); পিতা- হাবিব; অনিক (৫), পিতা- আলমগীর এবং মজিদা বেগম (৫০), স্বামী- ছায়েদ আলী; মোট ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার বলেন, যে জায়গায় ট্রলারটি ডুবেছে সেখানকার গভীরতা অনেক বেশি। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। কলমাকান্দা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে কাজ করছে। তবে নদীর পাশে হলহলিয়া হাওরের একটি চ্যানেল থাকায় উদ্ধারকারীরা ধারণা করছেন কয়েকজনের লাশ হাওরের দিকে ভেসে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সরু নদী দিয়ে আগে কখনও বড় বাল্কহেড নৌযান চলাচল করেনি। এখন চলাচল করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। বড় নৌযান চলাচল বন্ধ না করলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান এখনও চলছে।
তিনি জানান, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
বর্তমানে ঘটনাস্থলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, ধর্মপাশা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত আছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে ট্রলারডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নগদ ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
নেত্রকোনায় ট্রলারডুবি, ১০ জনের লাশ উদ্ধার
ভিডিও: