X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১

অন্য প্রতিষ্ঠানে পাঠদান, সম্মানির অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি

দিনাজপুর প্রতিনিধি
১২ অক্টোবর ২০২০, ২৩:৫১আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২০, ২৩:৫২




অধ্যাপক মোস্তাফিজার রহমান দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোস্তাফিজার রহমানের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার প্রাপ্ত সম্মানির এক তৃতীয়াংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দিতে বলেছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোস্তাফিজার রহমানকে দেওয়া গত ১ সেপ্টেম্বর স্মারক নম্বর-হাবিপ্রবি/সংস্থা:/৬৫৬৮-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রার (সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত) ডা. ফজলুল হক স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই আদেশ দেওয়া হয়। তবে চিঠি দেওয়ার প্রায় দেড় মাস হয়ে গেলেও সেই অর্থ জমা দেননি শিক্ষক প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

শিক্ষকের দাবি বন্ধের দিনে ক্লাস গ্রহণ করার পারিতোষিকের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেওয়ার নিয়ম নেই, চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া ওই রেজিস্ট্রারও বলছেন- চিঠিটি ভুলক্রমে দেওয়া হয়েছে।

যদিও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তা বলছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করলে সেখানকার পারিতোষিকের অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

গত ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া পত্রে বলা হয় ‘আপনার ওপরে অর্পিত অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনও বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না এই শর্তে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির দিনে আপনাকে ১৫.০৩.২০১৮ থেকে ৩১.০৮.২০২০ পর্যন্ত গণবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকার অনুমতি প্রদান করা হলো। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৩৫(২)(ঙ) ধারা মোতাবেক আপনাকে উক্ত সময়ে প্রাপ্ত পারিতোষিকের এক তৃতীয়াংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দানের জন্য বলা হলো।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাবিপ্রবি থেকে লিয়েনে সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান। লিয়েনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরে আসেন এবং ২২ ফেব্রুয়ারি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান।

২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ছুটির দিনে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকার অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস শাখার পরিচালক পদে নিযুক্ত করা হয়। গত ১৫ মার্চ তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সফিউল আলম শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হবে না এই শর্তে হাবিপ্রবির ছুটির দিনে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকার অনুমতি দেন।

শিক্ষকতার অনুমতি পেলেও অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান অনুমোদন ছাড়াই গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত কাগজপত্র ও অভিযোগে জানা যায়, অনুমতি পাওয়ার আগেই তিনি ২০১৮ সালের ৩ মার্চ গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের আসন গ্রহণ করেন এবং ১০ মার্চ গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নথিতে স্বাক্ষর করেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের গড় নম্বরপত্রের কাগজ, শিক্ষকের উচ্চশিক্ষা ও বাৎসরিক ছুটির ফরম/আবেদনপত্রে, শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র বিভিন্ন কাগজে ডিন হিসেবে স্বাক্ষর করেন। এমনকি ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট জাতীয় ভেটেরিনারি ডিনস কাউন্সিলেও গণবিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের ডিন হিসেবে ড. মোস্তাফিজার রহমান অংশগ্রহণ করেন।

অন্য প্রতিষ্ঠানে পাঠদান, সম্মানির অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তবে ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হতে পারবেন না। এছাড়াও হাবিপ্রবির অনুমতি ছাড়াই তিনি গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পারিতোষিকের এক তৃতীয়াংশ অর্থ জমা দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এমন চিঠি পাওয়ার পর আমি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। আর গণবিশ্ববিদ্যালয়ে সেসব দিনে আমি দায়িত্ব পালন করেছি, যেসব দিনে ছুটি ছিল। নরমাল তারিখে আমি দায়িত্ব পালন করিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করা সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. ফজলুর রহমান বলেন, ওই শিক্ষক শুধুমাত্র শুক্র ও শনিবার গণবিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। ওই সময়ে তিনি অন্য কোনও দায়িত্ব পালন করেননি। পারিতোষিকের এক তৃতীয়াংশ জমা দেওয়ার চিঠিটা ভুলক্রমে দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিটি প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে।

তবে ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এই বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধিতে আছে, যে যদি কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন, তাহলে তাকে পারিতোষিকের এক তৃতীয়াংশ অর্থ ওই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দিতে হবে। ফাইনান্সিয়াল রুলেও এই বিষয়টি রয়েছে বলে জানান তিনি। 

/টিটি/
সম্পর্কিত
আলোর স্বল্পতা রোধে মোমবাতি সঙ্গে আনার পরামর্শ পরীক্ষার্থীদের
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ
সর্বশেষ খবর
সরকারের সব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে দেশে গরিব থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
সরকারের সব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে দেশে গরিব থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
রিমান্ড শেষে কারাগারে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক
রিমান্ড শেষে কারাগারে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক
শৈশবের স্মৃতিময় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা
শৈশবের স্মৃতিময় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা
বজ্রাঘাত প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসে যা বলা হয়েছে
বজ্রাঘাত প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসে যা বলা হয়েছে
সর্বাধিক পঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
৫ জনকে হারিয়ে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান সেই সুইটি
৫ জনকে হারিয়ে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান সেই সুইটি
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে পারমাণবিকনীতি পরিবর্তন করবে ইরান
অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে পারমাণবিকনীতি পরিবর্তন করবে ইরান
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি